মেক্সিকোর অভিবাসী ইনস্টিটিউটে আগুনে নিহত বেড়ে ৩৮
মেক্সিকোর যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তবর্তী শহর সিউদাদ জুয়ারেজের ন্যাশনাল মাইগ্রেশন ইনস্টিটিউটের (আইএনএম) ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮-এ দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আইএনএমর নিন্দা জানিয়ে এর তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ এল সালভাদর। কারণ, নিহতদের মধ্যে দেশটির কয়েকজন রয়েছেন। আজ বুধবার (২৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
এদিকে, আইএনএম ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে প্রার্থনা করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। স্প্যানিশ ভাষায় প্রার্থনা করেছেন এই ধর্মগুরু। আজ সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে সাপ্তাহিক ভাষণে জনতার উদ্দেশে পোপে ফ্রান্সিস বলেন, ‘প্রভু নিহতদের তাঁর রাজ্যে গ্রহণ করবেন এবং পরিবারগুলোকে সান্ত্বনা দেবেন। আসুন আমরা এর জন্য প্রার্থনা করি।’
গত সোমবার রাতে সিউদাদ জুয়ারেজের আইএনএম ভবনে আগুন লাগে। এতে মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার অভিবাসন প্রত্যাশীরা বেশি নিহত হয়েছে। প্রত্যাবাসন নিয়ে বিক্ষোভের জেরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে এল সালভাদর সরকার এক বিবৃতিতে বলে, ‘অভিবাসী বন্দিশিবিরের কর্মীদের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি। অগ্নিকাণ্ডের সময় বিভিন্ন জাতীয়তার কয়েক ডজন লোক মারা গিয়েছিল, যার মধ্যে বেশ কয়েকজন সালভাদোরও ছিল। আমরা দাবি করছি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ঘটনাটি তদন্ত করবে এবং দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করবে।’
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদরের দাবি, অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত অভিবাসীদের দ্বারা হয়েছিল। অভিবাসীরা যখন জানতে পারেন, তাঁদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা হবে, তখন বিছানাপত্রে আগুন দিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।’
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আইএনএম ভবনের সিসি ক্যামেরার ওই ফুটেজে দেখা যায়, ভবনটি একটি বন্ধ রুম থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। সেখানে আগুনের শিখাও দেখা যায়। এ সময় রুমটির ভেতরে থাকা একজন দরজায় লাথি মারছিল। এ ছাড়া, ৩০ সেকেন্ডের আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, অফিসিয়াল ইউনিফর্ম পরিহিত তিনজন ওই রুমটির বাইরে দিয়ে যাচ্ছে। তারা বিষয়টি দেখলেও দরজা খোলার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
ভিডিওগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স। তবে, মেক্সিকোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডান আগস্তু লোপেজ বলেছেন, ‘ভিডিওগুলো আমরা পেয়েছি। এগুলো যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্য মতে, ২০১৪ সাল থেকে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে চেয়ে নিহত বা নিখোঁজ হয়েছে সাত হাজার ৬৬১ জন।