লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভে উত্তপ্ত হচ্ছে ইউরোপ, নেদারল্যান্ডসে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
নেদারল্যান্ডসে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে লকডাউন আরোপ করায় এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। দ্য হেগ শহরের সড়কে বাইসাইকেলে আগুন দেন বিক্ষুব্ধরা। সেখানে পুলিশকে লক্ষ্য করে আতশবাজি ছোড়েন তাঁরা। রটারডাম শহরে বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নিলে পুলিশ ফাঁকাগুলি ছোড়ে। সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
শনিবার থেকে তিন সপ্তাহের আংশিক লকডাউন শুরু হয়েছে নেদারল্যান্ডসে। রাত ৮টায় পানশালা ও রেস্তোঁরা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পুরোপুরি দর্শকশূন্য থাকবে সব ধরনের খেলাধুলার আয়োজন।
পুলিশ বলছে, দ্য হেগে রোগী বহন করা একটি অ্যাম্বুলেন্সের জানালায় বিক্ষোভকারীদের কেউ একজন পাথর ছুড়ে মেরেছেন। এ ছাড়া বিক্ষোভে পাঁচ জন পুলিশ আহত হয়েছেন। এবং অন্তত তিন জন বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
দ্য হেগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
করোনার সংক্রমণ বাড়ার ফলে নতুন করে লকডাউনসহ কড়াকড়ির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে ইউরোপের অপর দেশ অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়া ও ইতালিতে। মানুষজন রাস্তায় নেমে স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধার প্রতিবাদ করছে।
ইউরোপের অনেকগুলো দেশে নতুন করে করোনা বেড়ে যাওয়ায় সেসব দেশের সরকার নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করছে। কয়েকটি দেশে এক দিনে রেকর্ড সংখ্যক সংক্রমণের তথ্য পাওয়া গেছে।
ইউরোপজুড়ে করোনার সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, তারা মহাদেশটির করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ‘খুবই উদ্বিগ্ন।’
ডব্লিউএইচও’র আঞ্চলিক কর্মকর্তা ড. হ্যান্স ক্লুগ বিবিসিকে বলেন, ইউরোপজুড়ে কড়াকড়ি আরোপ করা না হলে, আগামী বসন্তের আগ পর্যন্ত আরও পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু দেখতে হবে। কোভিডে ফের এ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।’
আগামীকাল সোমবার থেকে ২০ দিনের লকডাউনে যাচ্ছে অস্ট্রিয়া। এর প্রতিবাদে রাজধানী ভিয়েনায় হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন। আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে করোনার টিকা বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবছে অস্ট্রিয়া। ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে টিকা বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে ভিয়েনা।
ক্রোয়েশিয়ায় সরকারি চাকরিজীবীদের টিকা বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদে রাজধানী জাগরেবে বিক্ষোভ হয়েছে।
অন্যদিকে, কর্মস্থলে ও গণপরিবহণে ‘গ্রিন পাস’ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ইতালিতে। ঐতিহ্যবাহী সারকাস ম্যাক্সিমাসে জড়ো হয়ে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন কয়েক হাজার মানুষ।
এ ছাড়া ফ্রান্স শাসিত ক্যারিবীয় দ্বীপ গুয়াদেলোপেও করোনার সংক্রমণ রোধে আরোপিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে। সেখানে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।