সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার পথে প্রচণ্ড ঠান্ডায় ৭ বাংলাদেশির মৃত্যু
লিবিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে ঠান্ডায় জমে সাত বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী প্রাণ হারিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, তাঁরা নৌকায় করে লিবিয়া থেকে ইতালির ল্যাম্পাডুসা দ্বীপের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন।
এক বিবৃতিতে ইতালির আগ্রিজেন্তোর প্রসিকিউটর লুইগি প্যাত্রোনাজিও বলেন, ঠান্ডায় শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমে আসায় সাত বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়।
ল্যাম্পাডুসার মেয়র সালভারোতে মারতেল্লো বাংলাদেশিদের প্রাণহানির ঘটনা নিশ্চিত করে বলেছেন, ওই নৌকায় ২৮০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন, যাঁদের বেশির ভাগ বাংলাদেশ, মিসর, মালি ও সুদানের নাগরিক।
রয়টার্স জানিয়েছে—যে নৌকায় করে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা লিবিয়া হয়ে সমুদ্রপথে ইউরোপ যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, ইতালির কোস্ট গার্ডের সদস্যেরা দেশটির লামপিওনি দ্বীপের উপকূল থেকে ২৯ কিলোমিটার দূরে সেটি ভাসতে দেখেন। এবং পরে ওই নৌকাটির সন্ধান পান। এরপর কোস্ট গার্ডের সদস্যেরা সেখানে উদ্ধার অভিযান চালান।
সালভারোতে মারতেল্লো রয়টার্সকে জানিয়েছেন, উদ্ধার করা ব্যক্তিদের নভেল করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১০০ জনকে একটি জাহাজে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হবে।
রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম বিষয়ক কাউন্সিলর মোহাম্মদ এরফানুল হকের বরাতে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইতালির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দূতাবাসকে কিছু জানানো হয়নি। তবে, সিসিলিতে বাংলাদেশের অনারারি কনসাল যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের বিষয়টি সম্পর্কে খবর নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রতি বছর বহু অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশী ইউরোপ ঢোকার জন্য প্রথমে ইতালি ও গ্রিসের উদ্দেশে রওনা দেন। এ দুটি দেশকে ইউরোপে অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশী পাচারের গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গত কয়েক বছরে ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ অভিবাসন যাত্রায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
২০০১ সালে প্রায় ৬৫ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী উপকূল থেকে ইতালিতে ঢুকেছেন, যা তার আগের বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
শুধু চলতি মাসেই ঠান্ডা আবহাওয়া উপেক্ষা করে এক হাজার ৭০০ মানুষ ইতালিতে প্রবেশ করেছেন।