রাখাইনে হামলায় ২১ ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী’ ও ১১ নিরাপত্তাকর্মী নিহত
মিয়ানমারের রাখাইনে পুলিশ ও সেনাক্যাম্পে হামলায় কমপক্ষে ৩২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান। নিহতদের মধ্যে ১১ নিরাপত্তাকর্মী ও ২১ ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী’ রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে।
সেনাপ্রধান জানান, রাখাইন রাজ্যে দুর্গম এলাকায় সীমান্ত পোস্টে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ১১ নিরাপত্তাকর্মীর মধ্যে একজন সেনাসদস্য ও ১০ পুলিশ সদস্য রয়েছেন। এ ছাড়া এই হামলায় ২১ ‘সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সকালে দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে রাখাইন রাজ্যে বৃহস্পতিবার রাতে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে সন্ত্রাসী হামলার কথা জানানো হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার রাতে সন্ত্রাসীরা সংঘবদ্ধভাবে একসঙ্গে রাজ্যের ২৪টি পুলিশ পোস্টে হামলা চালায়। এ হামলায় পাঁচ পুলিশ ও সাত মুসলিম রোহিঙ্গা নিহত হন। এ ছাড়া সন্ত্রাসীরা একটি সেনা আবাসেও হামলার চেষ্টা চালায়।
গত বছরের ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য মারা যান। অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটের ঘটনা ঘটে। এর পর আবার একই ধরনের হামলার তথ্য দিল মিয়ানমার সরকার।
জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। জাতিগতভাবে নির্মূল করতে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের গ্রামে আগুন দিয়ে বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়াসহ গণহত্যা ও গণধর্ষণ চালায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে এক পর্যন্ত ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
এর আগে ২০১২ সালের জুনেও মিয়ানমারে সম্প্রদায়িক দাঙ্গায় আক্রান্ত রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায়। ওই সময় সরকার অনুপ্রবেশ ঠেকাতে শক্ত অবস্থান নেয়। যার ফলে ওই সময়ে সাড়ে পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা পুশব্যাক করা হয়।