উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি ইরানের
ইরানের আকাশে হানা দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুপ্তচর ড্রোনকে গুলি করে ভূপাতিত করার দাবি করেছে দেশটির ইসলামিক রেভল্যুশন গার্ড (ইআরজি)।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের হরমোজগান রাজ্যের কুহমোবারক এলাকায় ‘আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক’ নামে একটি ড্রোনকে ভূপাতিত করেছে ইরানের সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মার্কিন সেনাবাহিনীর তরফ থেকে কোনো ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়নি। তবে ইরানের আকাশসীমায় কোনো মার্কিন বিমানের উপস্থিতির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মার্কিন সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র।
মধ্যপ্রাচ্যে আরো এক হাজার মার্কিন সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেওয়ার কয়েক দিনের মাথায় এমন ঘটনা ঘটল।
ওমান উপসাগরে কয়েকটি তেলবাহী ট্যাঙ্কারে মাইন হামলা করেছে ইরান—এমন অভিযোগ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
এরপর গত সোমবার ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে বিদ্যমান পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে নিজেদের ইউরেনিয়াম মজুদ ও সমৃদ্ধকরণ মাত্রা বাড়ানোর ঘোষণা দেয় ইরান।
যুক্তরাষ্ট্রের চাপানো অর্থনৈতিক অবরোধ এবং দেশটির সঙ্গে চলমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে পরমাণু চুক্তি রক্ষায় ইউরোপীয় দেশগুলোর ওপর নতুন করে চাপ তৈরি করতে ইরান এমন ঘোষণা দেয়।
ইরানের ওই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে অতিরিক্ত এক হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেয়।
এদিকে ইরানের যে অঞ্চলে মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করার কথা বলা হচ্ছে, সেটি বিশ্বের তেল পরিবহনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পথ হরমুজ প্রণালির খুব কাছেই।
মার্কিন সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের মুখপাত্র নেভি ক্যাপ্টেন বিল আরবার রয়টার্সকে বলেন, ‘ইরানের আকাশসীমায় আজ কোনো মার্কিন এয়ারক্রাফট পাঠানো হয়নি।’
তবে এ ব্যাপারে আর বিস্তারিত কিছু জানাতে অস্বীকৃতি জানান এই কর্মকর্তা।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে পরমাণু নিয়ন্ত্রণবিষয়ক এক চুক্তি স্বাক্ষর করে ইরান। বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু গত বছর ইউরোপীয় মিত্রদের বাধা সত্ত্বেও ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে ইরানের ওপর তেল রপ্তানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে একের পর এক অবরোধ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।