নেপালে ১৩ ভারতীয় জওয়ান আটক, পরে মুক্ত
নেপাল সীমান্তে ভারতীয় আধা-সামরিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) ১৩ জওয়ানকে আটক করেছেন নেপাল সীমান্তরক্ষীরা। আজ রোববার স্থানীয় সময় ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে ঝাপা জেলার কেচানা গ্রামে এই জওয়ানদের আটক করা হয়।
আটকের সময় জওয়ানদের কাছে অত্যাধুনিক রাইফেল ছিল বলে জানিয়েছে নেপালের আর্মড পুলিশ ফোর্স (এপিএফ)।
এপিএফের প্রধানের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এপিএফ জানায়, নেপালের ঝাপা জেলায় এই ১৩ জন ভারতীয় সীমান্তরক্ষীকে ‘চোরাকারবারি’ সন্দেহে আটক করা হয়। আটকের চার ঘণ্টা পর ‘তদন্ত’ শেষে জওয়ানদের মুক্তি দেয় এপিএফ। ঝাপা জেলাটি ভারতের বিহার রাজ্যের কিষানগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী।
নেপাল পুলিশের সহকারী জেলা কর্মকর্তা দামবারু প্রসাদ নিরাউলা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই জওয়ানদের ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর হরা হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনার ব্যাখ্যায় নয়াদিল্লি জানায়, ১২তম এসএসবি ব্যাটালিয়নের ১৫ জন জওয়ানের একটি দল ওই এলাকা টহল দিচ্ছিল। দলের নেতৃত্বে ছিলেন কনস্টেবল রোশান ও রামপ্রসাদ। বাকি ১৩ জওয়ান তাদের অনুসরণ করছিল। এই অনুসরণ করতে গিয়েই ‘অসাবধানতাবশত’ নেপাল সীমান্তের ৫০ মিটার ভেতরে ঢুকে পড়েন জওয়ানরা। সেখানে অবস্থিত খুনতানমানি গ্রামের বাসিন্দারা জওয়ানদের ঘিরে ফেলে।
এদিকে সকালে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) এসএসবির মহাপরিচালক বিডি শর্মা বলেন, আমার সঙ্গে এপিএফের প্রধান কেশ রাজ ওনতার কথা হয়েছে। তিনি নিশ্চয়তা দিয়েছেন আটক করা জওয়ানদের খুব তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেওয়া হবে।
বিডি শর্মা জানান, ভারতের সঙ্গে নেপালের ১৭৫১ কিলোমিটার তারকাটাবিহীন সীমান্ত আছে। এত বড় এলাকায় এমন ভুল অস্বাভাবিক কিছু নয়।
তবে নেপালের সংবাদমাধ্যম হিমালয়ান টাইমসকে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সাবেক প্রধান চন্দ্রকিশোর ধাকাল বলেন, গত সপ্তাহেই অবৈধভাবে সীমান্তে প্রবেশের জন্য চার এপিএফের জওয়ানকে গুলি করে আহত করেছে সশস্ত্র সীমা বল।
ভারতের সীমান্তরক্ষী আধা-সামরিক বাহিনী সশস্ত্র সীমা বল ভারত-নেপাল ও ভারত-ভুটান সীমান্ত প্রহরার কাজে নিয়োজিত। ভারত-চীন যুদ্ধের পর ১৯৬৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর সে সময়ের প্রধান ভোলানাথ মল্লিক এই সংস্থাটি স্থাপন করেন। তখনকার নাম ছিল স্পেশাল সার্ভিস ব্যুরো।
আগে এসএসবি ছিল ভারতের সরকারি গেরিলা বাহিনী। উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যতে বিদেশি আক্রমণে সেনাবাহিনী পরাজিত হয়ে পিছু হটলে এসএসবি পিছিয়ে থেকে গ্রামবাসীদের সঙ্গে মিলিতভাবে আগ্রাসী বিদেশি বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।