মন্দিরে প্রবেশে বাধা, দলিত শ্যাম হলেন আজাদ
এক মাস আগেও তাঁর নাম ছিল শ্যাম সিং। এখন নিজের পরিচয় দেন ‘আজাদ’ (স্বাধীন)। শব্দটি একই সঙ্গে তাঁর নাম ও তাঁর নতুন অবস্থান।
ভারতের মিরাটের মঙ্গা গ্রামের দলিত বাল্মীকি সম্প্রদায়ের একজন শ্যাম। দুই সপ্তাহ আগে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
দুটি কারণে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছেন। প্রথমত, ভাগবত জেলার প্রখ্যাত বাল্মীকি মন্দিরে তাঁর সম্প্রদায়ের প্রবেশ ও পূজা করায় বাধা দেওয়া হয়। দ্বিতীয়ত, পূজার অধিকার চাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্থানীয় কর্মকর্তারা তাঁকে প্রতিনিয়ত হুমকি ও লাঞ্ছিত করে আসছিলেন। এ থেকে পরিত্রাণ পেতেও তিনি ধর্মান্তরিত হয়েছেন।
ভারতের সংবাদম্যাধম দ্য হিন্দু জানায়, প্রখ্যাত বাল্মীকি মন্দির নিয়ন্ত্রণ করে যাদব সম্প্রদায়। আর বাল্মীকি সম্প্রদায়ের মানুষের পূজা করার বিষয়টি সেখানকার পুরোহিতের পছন্দ নয়। এর আগে গত নভেম্বরে ওই পুরোহিত জানিয়েছিল, শ্যাম ও তাঁর সম্প্রদায়ের সেখানে পূজা করার কোনো অধিকার নেই।
সমাজে অধিকার পাওয়ার বাধার পর বাল্মীকি সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ইসলাম গ্রহণ করার হুমকি দেওয়া হয়। গত সপ্তাহে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এ জন্য শ্যাম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করেন।
গত বছরের নভেম্বর থেকে ভাগবত ও মিরাটের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পিটিশন করেন শ্যাম। ন্যাশনাল কমিশন ফর শিডিউল কাস্ট ও শিডিউল ট্রাইব বরাবরও পিটিশন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর অফিস বরাবরও পিটিশন যায়।
আজাদ (শ্যাম) অভিযোগ করেন, ‘হিন্দু হয়ে লাভ কী যদি পূজা করার জন্য মন্দিরে প্রবেশ করতে না পারলাম?’
শ্যামের ধর্মান্তরিত হওয়ার কথা জানতে পেরে শঙ্কিত হয়ে পড়ে তাঁর সম্প্রদায়ের মানুষ। লাঞ্ছিত হওয়ার শঙ্কায় এদের অনেকে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করছেন। আজাদ (শ্যাম) নিজেই নেপাল চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
তবে আজাদ (শ্যাম) ও তাঁর দলিত সম্প্রদায়ের ঘোষণা ও পদক্ষেপের পর ডানপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলোর টনক নড়ে। তাঁরা ইসলাম গ্রহণ না করতে অনুরোধ করে।
আজাদ (শ্যাম) বলেন, ‘সবাই চায়, আমরা ইসলাম গ্রহণ না করি। কিন্তু কেউ মন্দিরে প্রবেশ করার অধিকার নিয়ে কথা বলে না।’
স্থানীয় ভাগবত জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা রাজেন্দর সিং ভারতের দ্য হিন্দুকে বলেন, বাল্মীকিদের পূজা নতুন ধরনের। এ কারণে মন্দিরে তার অনুমতি দেওয়া হয়নি।