ভাসমান অভিবাসীদের সাহায্যে এগিয়ে এলো ফিলিপাইন
সাগরে নৌকায় ভাসমান কয়েক হাজার অভিবাসীপ্রত্যাশী মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফিলিপাইন। প্রতিবেশী দেশগুলোর জলসীমা বন্ধ করে দেওয়ার উদ্যোগের মধ্যেই এই প্রথম নৌকায় ভাসমানদের আশ্রয়ের ঘোষণা দিল ম্যানিলা।
উদ্বাস্তুবিষয়ক জাতিসংঘের চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ফিলিপাইন জানিয়েছে, সাগারে নৌকায় থাকা কয়েক হাজার মানুষকে ইতিমধ্যেই তাঁরা আশ্রয় দিয়েছে। এর আগে স্থানীয়ভাবে প্রচার হয়েছিল, প্রায় আট হাজার অভিবাসীকে দেশের সীমানা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে ফিলিপাইন। দেশটির কর্তৃপক্ষ ওই খবর ভুল দাবি করেছে।
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট বেনিগনো অ্যাকুইনোর মুখপাত্র হারমিনিও কোলোমা বলেন, ‘নৌকার মানুষে’র প্রতি মানবিক সহায়তা করছে ম্যানিলা। এমনকি সত্তরের দশকে ভিয়েতনাম থেকে আসা মানুষদের জন্যও একটি প্রক্রিয়া কার্যালয় করেছে তারা।
হারমিনিও কোলোমা আরো বলেন, জাতিসংঘকে দেওয়া অঙ্গীকার অনুযায়ী মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য ম্যানিলার নিজের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
তবে আন্দামান সাগর থেকে ফিলিপাইনের জলসীমায় পৌঁছুতে নৌকার ভাসমান অভিবাসীপ্রত্যাশীদের দীর্ঘ দূরত্ব পারি দিতে হবে। এই মুহূর্তে আন্দামান সাগরে থাকা নৌকায় খাবার ও জ্বালানি পরিমাণ বেশ কম। তবে ফিলিপাইনের ঘোষণার পর আন্দামান সাগরে নৌকায় ভাসমান তিন হাজার উদ্বাস্তুর ব্যাপারে একটি সমাধান পাওয়া গেল। নৌকায় থাকা নারী ও শিশুসহ মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমান ও বাংলাদেশিদের আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানায় ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড।
অভিবাসীবিষয়ক জাতিসংঘের সংস্থা আইওএমের মুখপাত্র জো লোওরি বলেন, ফিলিপাইনের ঘোষণা আশাব্যঞ্জক। প্রতিবেশী দেশগুলোয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি বলেন, ১০ দিন ধরে দেশগুলোকে অনুরোধ করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের আহ্বান সত্ত্বেও অভিবাসীপ্রত্যাশী নৌকার মানুষকে ফিরিয়ে দিয়েছে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড। জাতিসংঘের দৃষ্টিতে এগুলো ‘ভাসমান কফিন’। গত সপ্তাহে থাইল্যান্ড থেকে তাড়িয়ে দেওয়া নারী ও শিশুসহ ৩০০ অভিবাসীপ্রত্যাশীর একটি নৌকার ভাগ্যে কী ঘটেছে এখনো জানা যায়নি। নৌকাটি মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যবর্তী সমুদ্রের কোনো স্থানে আছে। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার কোস্টগার্ড সদস্যরা এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি।
অভিবাসী সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে আলোচনা করবেন। আগামী ২৯ মে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনৈতিক জোট আসিয়ান সম্মেলন।