গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে মৃতের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়াল
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস আবারও ৭ অক্টোবরের হামলার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের অবসান ঘটাতে হবে। তবে সংগঠনটি কিছু ভুল স্বীকার করে নিয়েছে। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ইসরায়েলের অব্যাহত আগ্রাসনে মৃতের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে। গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চল এখন ইসরায়েলি হামলার অন্যতম লক্ষ্যবস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। খবর এএফপির।
ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর যে যুদ্ধ শুরু হয় সে সম্পর্কে প্রকাশিত এক খোলা প্রতিবেদনে সংগঠনটি বলেছে, তারা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব অবসানে ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির জন্য বেশ কিছু ‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ’ নিয়েছে।
হামাসের ১৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে, ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন নিয়মের কারণে তাদের কিছু ভুল হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়া ও সীমান্তে বিশৃঙ্খলার কারণে এসব ভুল হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘পরিপূর্ণ বিজয়ের’ শপথ নিয়ে বলেছেন তার সরকার গাজায় এখনও আটকে রাখা ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে হামাসের কোনো শর্তকে গ্রহণ করবে না।
গত বছরের অক্টোবরে হামাসের সশস্ত্র যোদ্ধারা গাজার সামরিক সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামলা চালায় এবং ইসরায়েলের নাগরিক ও বিদেশিদের ওপর তাদের বাড়িঘরে ও রাস্তায় আক্রমণ করে। ওই হামলায় হামাস এক হাজার ১৪০ জনকে হত্যা করে যাদের বেশিরভাগই ছিল সাধারণ মানুষ। এ ছাড়া হামাস ২৫০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশিকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে আসে। ইসরায়েল বলছে তাদের মধ্যে এখনও ১৩২ জনকে আটকে রেখেছে হামাসের যোদ্ধারা।
এই হামলার জবাবে ইসরায়েল গাজায় সর্বাত্মক হামলা চালায়। আকাশ, নৌ ও স্থলপথের অভিযানে গাজায় এ পর্যন্ত ২৫ হাজার ১০৫ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছে বলে জানিয়েছে হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নির্বিচার হত্যকাণ্ডের শিকার এসব লোকের বেশিরভাগই নিরীহ শিশু ও নারী।
এদিকে, গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলার জেরে খাবার, পানি, চিকিৎসাসামগ্রীসহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনীয় সামগ্রীর তীব্র সংকটে থাকা গাজাবাসী এখন দুর্ভিক্ষ আর মহামারির হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা।
গতকাল রোববার (২১ জানুয়ারি) জরুরি মানবিক সহায়তা হিসেবে গাজায় ২৬০টি ট্রাক প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া গত শুক্রবার সেখানে ২৮৮টি ট্রক জরুরি পণ্য নিয়ে প্রবেশ করে। তবে এসব সাহায্য সামগ্রী প্রয়োজনের তুলনায় নগন্য বলে জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, আরব দেশগুলো এবং অন্যান্য দেশের সরকার ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সংকট সমাধানের জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এই ধারণা বাতিল করে দিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজার নিরাপত্তার ভার অবশ্যই ইসরায়েলের হাতে থাকবে। অন্যদিকে, হামাসের প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুদ্ধপরবর্তী অবস্থার জন্য ইসরায়েলি দাবিকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।