শেখ হাসিনার ভারতে থাকা উচিত : শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আগে থেকেই ছিল সমালোচনা। এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। এ ছাড়া যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলোও এই নির্বাচন থেকে বাইরে ছিল। সেই নির্বাচনে সরকার গঠনের মাত্র সাত মাস পর গণবিপ্লবের মুখে বাংলাদেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। তাকে অপসারণের দাবিতে ৩৬ দিন টানা আন্দোলনে গত ৫ আগস্টের ভারতে আশ্রয় নেন তিনি।
ভারতে আশ্রয়ের ৪৫ দিন পার হয়েছে শেখ হাসিনার। কূটনৈতিক পাসপোর্টের ক্ষমতাবলে তিনি সেখানে এ কয়টি দিনই থাকার বৈধতা পান। তবে, এর আগেই সব লাল পাসপোর্ট বাতিল করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। সে হিসেবে তিনি আসলে দেশটিতে কীভাবে ছিলেন বা আগামীতে কীভাবে থাকবেন অথবা অন্য কোনো দেশে যেতে পারবেন কি না—সেই প্রশ্ন খুঁজছেন অনেকে।
এমন একটি সময় ভারতীয় গণমাধ্যম ফার্স্টপোস্টের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক পালকি শর্মাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে থাকা উচিত।
রনিল বিক্রমাসিংহে তার দেশে গণবিপ্লবের মুখে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হন। ২০২২ সালে গণঅভ্যুত্থানে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তারপর বিক্রমাসিংহে একটি সমঝোতার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট হন ও শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার চেষ্টা করেন।
ওই ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশও শ্রীলংকার পথে হাঁটছে বলে বিভিন্ন আলোচনায় উঠে আসে। সে সময়ের স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা এসব মন্তব্য ও শঙ্কাকে উড়িয়ে দেন। একইসঙ্গে তার মন্ত্রীসভার অনেক মন্ত্রী এগুলো নিয়ে বিভিন্ন সময় ব্যঙ্গ করেন। তবে, গত ৫ আগস্ট সেপথেই হাঁটল দেশ। আর বাংলাদেশ থেকে হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন ভারতে।
হাসিনাকে ভারত থেকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের দাবির বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট বলেন, অনেক নেতা দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে যান। শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও যদি তিনি দেশের বাইরে থাকেন, তবে তাকে বাইরে থাকতে দিন। আমরা সবাই চাই বাংলাদেশ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুক।
শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে বিক্রমাসিংহে বলেন, এগুলো রাজনৈতিক বিষয়, এটি এমনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যেন দেশ স্থিতিশীল থাকে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলমান সংকটের সমাধানে কী পরামর্শ দেবেন—প্রশ্নে বিক্রমাসিংহে বলেন, প্রথমে বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা আনতে হবে। জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। শেখ হাসিনার বিষয়টি রাজনৈতিক, অনেক নেতাই দেশের বাইরে চলে যান এবং সেখানে বসবাস করেন। আমার কাছে অগ্রাধিকার হলো বাংলাদেশকে স্থিতিশীল রাখা। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা যদি দেশের বাইরে থাকেন, তবে থাকুন। দ্রুত স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। সেনাবাহিনীও প্রয়োজন হতে পারে। আমরা সবাই চাই বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুক এবং জনগণ সিদ্ধান্ত নিক কীভাবে দেশ পরিচালিত হবে।