‘আমি তোমার হাত ছুঁয়ে নয়, বাংলাদেশের হাত ছুঁয়ে আছি’
“না শহীদ সেতো নেই; গোধুলিতে তাকে
কখনও বাসায় কেউ কোনদিন পায় নি, পাবে না।”
(শহীদ কাদরী, অগ্রজের উত্তর)
তাহলে কোথায় পাওয়া যাবে কাদরীকে? তবে কি পাওয়া যাবে?
‘‘আমি করাত-কলের শব্দ শুনে মানুষ।
আমি জুতোর ভেতর, মোজার ভেতর সেঁধিয়ে যাওয়া মানুষ।”
(শহীদ কাদরী, এবার আমি)
জুতোর ভেতর সেঁধিয়ে যাওয়া মানুষটিকে কি পাওয়া যাবে মটরের বনেট, পার্ক, সিনেমার কিউ, করাতকল, ল্যাম্পপোস্ট, কারফিউ, রেঁস্তোরা, ট্রাফিক সিগন্যাল, ট্যাক্সি, ফুটপাতে? না… শহীদ কাদরী ব্যক্তি মানুষটির ভেতর শুধুই কি একজন কাদরী বাস করে?
‘‘না, না, তার কথা আর নয়, সেই
বেরিয়েছে সকাল বেলায় সে তো – শহীদ কাদরী বাড়ি নেই”
(শহীদ কাদরী, অগ্রজের উত্তর)
লালনেরও সেই একই আর্তি। ‘‘আমি একদিনও না দেখিলাম তারে, বাড়ির কাছে আরশিনগর সেথা পড়শী বসত করে”। অডেনের কবিতাতেও সেই একি সুর বাজে,
Say This City has ten million souls,
some are living in mansions, some are
living in holes;
Yet there’s no place for us, my dear, yet
there’s no place for us
(ten songs)
‘কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বদেনা জাগাতে ভালোবাসে?’ জীবনানন্দ, ওডেন, লালন, কাদরী সকলেরই কেন এই পলায়ন বা আত্মনিমজ্জন? একজন মানুষের ভেতরে আরেকটি অচেনা মানুষকে নিরন্তর খোঁজার তাড়না থেকেই কি কবিদের এই সহজ কথা সহজে বলা? কী সেই অদেখা সত্তা, যাকে আমরা নিত্য খুঁজে বেড়াই? অথবা সত্যিই কি তাকে কি খুঁজে পাওয়া সম্ভব? তারপরও আমাদের নিরন্তর চেষ্টা চলে মনের সেই গহিন কূপে বাস করা সেই অদৃশ্য, মৃয়মান, অদেখা, প্রজ্বলিত, নিবিড় সত্তা আবিষ্কার করা। আর এই আবিষ্কার করতে গিয়েই শুরু হয় হয়তো এক নিদারুণ তোলপাড়, না পাওয়ার এক বেদনা। জন্ম নেয় ‘আমি’র সঙ্গে ‘আমি’র বোঝাপড়া। কবি বা শিল্পীজীবন আর রোজকার মানুষ জীবনের এক অদেখা লড়াই। তাই তো কাদরীর কাছে জানতে চাইলে ‘আপনার কবিজীবনের শেষ লক্ষ্য কী?’ উত্তরে তিনি বলেন—‘কবিজীবন বলে তো আলাদা কিছু নেই। পুরোটাই মনুষ্যজীবন।’
আমাদের কবি শহীদ কাদরী। বাংলা কবিতার একজন ক্যাপটেন। একজন অধিকর্তা। নিয়ন্ত্রক। প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অতন্দ্র প্রহরী। উত্তরাধিকারের উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা। কবি শহীদ কাদরীর মুখচ্ছবি মানসপটে ভেসে উঠলেই আমরা শান্তির একঝাঁক পায়রাকে আমাদের আকাশ জুড়ে উড়ে যেতে দেখি। তার কবিতায় প্রবেশ করলেই আমরা মনের অজান্তে বলে উঠি, ‘তোমাকে অভিবাদন, প্রিয়তমা’।
শহীদ কাদরী নাগরিক কবি এবং শুধুই নাগরিক কবি। এক সাক্ষাৎকারে তিনি খুব সরলভাবে তাঁর কবিতায় 'নাগরিক' প্রভাবের কথা বলেছেন খুব সরলভাবে। তাঁর জন্ম বেড়ে ওঠা সব নগরেই। তাঁর কবিতায় হঠাৎ জেগে ওঠা চরের মতো বেখাপ্পা অপরিচিত শব্দ নেই। খুব সহজ সাবলীলতায় চেনা শব্দের উপমায় আমরা পাই অভিনব সব বাঁকে। তাঁর কবিতার শব্দে গরম চায়ের গন্ধ, ফুটপাতের স্বল্প পরিছন্ন হাঁটা পথ, কখনো কখনো ছলকে ওঠে জনাকীর্ণ পথ হতে অন্দরের আধছায়া বিশ্রামের ঝিনঝিন নৃত্য। খুব সহজে আরামে বিড়ম্বনাহীনভাবে পড়ে ফেলা যায় যে কোন কবিতা। যেন ঘণ্টা হিসেবে ভাড়া নেওয়া রিকশায় শেষ বিকেলের নগর ভ্রমণ।
তবে এই নাগরিক বোধের একদিকে যেমন রয়েছে দীপ্র আধুনিকতা আবার এর উল্টোপিঠে তিনি অনেক নিঃসঙ্গ এবং অসহায়। সেখানে শুধু নগর জীবনের রুগ্ণতা, হীনতা, নিঃসঙ্গতা, ক্লেদ আর শূন্যতার চিত্র।
‘‘শহরের ভেতরে কোথাও হে রুগ্ন গোলাপদল,
শীতল, কালো, ময়লা সৌরভের প্রিয়তমা’’
(আলোকিত গণিকাবৃন্দ)
কিন্তু এই অন্ধকার থেকে পরিত্রাণ চান কবি। কবি স্বপ্ন দেখেন সুন্দর সকালের, আলোকিত জ্যোৎস্নাখচিত রাতের আকাশের। যেখানে সমাজ সৃষ্ট পাপ আর পাপ থাকে না তা অবলীলায় মানবিকতায় উত্তীর্ণ হয়ে পুণ্যতায় রূপ নেয়।
‘‘সেই স্যাঁতসেঁতে ঠান্ডা উপাসনালয়ে পেতে দাও
জায়নামাজ, শুকনো কাঁথা, খাট, স্তূপ, স্তূপ রেশমের স্বাদ।”
(শহীদ কাদরী, আলোকিত গণিকাবৃন্দ)
শহীদ কাদরী ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতা শহরের পার্ক সার্কাসে জন্মগ্রহণ করেন এবং কলকাতা শহরেই শৈশব কাটান। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর হিন্দু-মুসলমানের দাঙ্গা শেষে ১৯৫২ সালের দিকে দশ বছর বয়সে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৭৮ সাল থেকে প্রবাসজীবন শুরু করেন।
শহীদ কাদরীর প্রথম কবিতা ‘এই শীতে’ যখন বুদ্ধদেব বসুর কবিতা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়, তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৪। সে সময় কবিতা পত্রে কারও কবিতা ছাপা হওয়া মানেই ছিল তার কবি হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া। ১৯৬৭ সালে ছাপা হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ উত্তরাধিকার।
স্বাক্ষর’, ‘কণ্ঠস্বর’-এর কবিদের সঙ্গে শহীদ কাদরীর নিত্য উঠা-বাসা থাকলেও ‘স্বাক্ষর’-এ তাঁর কোন স্বাক্ষর ছিল না অথচ ‘স্বাক্ষর’ ও ‘কণ্ঠস্বর’-এর কবিরাই ছিল তাঁর সবচাইতে কাছের মানুষ, যেমন আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, আবদুল মান্নান সৈয়দ রফিক আজাদ, আসাদ চৌধুরী, সিকদার আমিনুল হক, শহীদুর রহমান, ইমরুল চৌধুরী, প্রশান্ত ঘোষাল, রণজিৎ পাল চৌধুরী–সকলেই তাঁর অনুজ ও প্রিয়ভাজন ছিলেন। বাংলাদেশের কবিতার উন্মেষের কালে পঞ্চাশে শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, শহীদ কাদরী, সৈয়দ শামসুল হকসহ বেশ কয়েকজন কবির কবিতায় পূর্ববাংলার জল-হাওয়া-সংগ্রাম-ঐতিহ্যের আলোকে উদ্ভাসিত হয় বাঙালির ঐকান্তিক বোধের সামগ্রিকতা। বলতে হয়, আধুনিক নগর ভাবনার কবি শহীদ কাদরী ১৯৪৭ পরবর্তীকালে বাঙালি কবিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, যিনি নাগরিক-জীবন-সম্পর্কিত শব্দ চয়নের মাধ্যমে বাংলা কবিতায় নাগরিকতা ও আধুনিকতাবোধের সূচনা করেছিলেন। যে কারণে তিনি নগরচেতনার দিক থেকে বাংলা কবিতায় অন্যদের থেকে আলাদা।
চারপাশের চলমান জীবন আর স্বপ্নের বীজ ধারণ করে, মানুষের জন্য তিনি সৃজনের যে ছায়া বুনে যান, তা ক্রমশই হয়ে উঠে প্রজন্মেরও একান্ত চাওয়া পাওয়া। আমরা তন্ময় হয়ে দেখি, দূর বিদেশে থেকেও স্বজাতি,স্বদেশ, সমকালের প্রতি একান্ত প্রহরীর ভূমিকা পালন করেন তিনি। কবি শহীদ কাদরী। আজন্ম নাগরিক কাদরী তার জীবনবোধে তিরিশ উত্তর আধুনিকতাকে সঞ্চারিত করে বাংলা কবিতাকে দিয়েছেন নতুন স্পন্দন। নগর জীবনের নৈকট্য ও দূরত্বকে ভাষা, ভঙ্গি ও বক্তব্যে ঋদ্ধ করেছেন তিনি। শহর এবং সভ্যতার বিস্বাদ ও বিচ্ছিন্নতাও উঠে এসেছে তার কাব্যে।
তিনি বলেন :
“আমি জানি গুপ্তঘাতকেরা
ছড়িয়ে রয়েছে আমার শহরে।
তাদের নিধন চেয়ে
কবিতাকে অস্ত্রের মতো
ব্যবহার করতে চেয়েছি আমি বহুবার।”
(শহীদ কাদরী, যদি মুখ খুলি )
‘কবিতা, অক্ষম অস্ত্র আমার’ কবিতায় কবিতাকে শহীদ কাদরী নান্দনিক সৃষ্টিশীল অস্ত্র হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। কবিতার আত্মপ্রত্যয়ী অনুভবের মধ্যে কবি বীজ বপন করেছেন স্বদেশপ্রেমের। ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত তাঁর দ্বিতীয় কাব্য ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’ মূলত মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ-পরবর্তী সমাজবাস্তবতাকে ধারণ করেছে। তার এসব কবিতার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ও জনপ্রিয় কবিতা ‘তোমাকে অভিবাদন, প্রিয়তমা’। এই কবিতায় স্বদেশভূমিকে প্রিয়তমা সম্বোধন করে কবি অঙ্গীকার করছেন :
‘ভয় নেই
আমি এমন ব্যবস্থা করব মুদ্রাস্ফীতি কমে গিয়ে বেড়ে যাবে
শিল্পোত্তীর্ণ কবিতার সংখ্যা প্রতিদিন
আমি এমন ব্যবস্থা করব গণরোষের বদলে
গণচুম্বনের ভয়ে হন্তারকের হাত থেকে পড়ে যাবে ছুরি, প্রিয়তমা।’
এ কবিতায় দেখা কবির স্বপ্ন থেকে আমরা আজও অনেক দূরে রয়েছি। যুদ্ধোত্তর সময়ে দেশের দুর্ভিক্ষ ও রেশনের দোকানের স্বজনপ্রীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধেও কবি কলম ধরেছেন। ‘নীল জলের রান্না’ কবিতায় বিভক্ত মানুষের রাজনীতি কবির চোখ এড়ায়নি। কবির তৃতীয় কাব্য ‘কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই’-এর অনেক কবিতায় তাঁর প্রথম ও দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থের অনুরণন থাকলেও গ্রন্থটির বেশকিছু কবিতা পরিণত শিল্পসুষমায় ঋদ্ধ।
পরবাসে ভ্রাম্যমাণ, অস্থির, অনিকেত অবস্থা থেকে স্বদেশ-স্বজনের দিকে ফিরে আসার আকুতিতে ভরা।
‘কিন্তু আমি…
সেখানে আমার গাঁ কিংবা শহর
কিংবা বাড়ি কিছুই এখনো খুঁজে পেলাম না’
(নিরুদ্দেশ যাত্রা)
বাস্তবের সংঘাতে আহত কাদরী জীবনসঙ্গিনীকে সমস্যা, জটিলতা, অসহায়তার ইঙ্গিত দিয়েও বলছেন,
‘এখন তোমার সব দায়-দায়িত্ব আমাকে নিয়ে নিতে হবে, হবেই।’
আবার দয়িতাকে না হারাতে চেয়ে লিখেছেন,
‘দাঁড়াও আমি আসছি
তোমাকে চাই ভাসতে-ভাসতে
ডুবতে-ডুবতে,
ডুবে যেতে-যেতে আমার
তোমাকে চাই।’
কলকাতার পর ঢাকার আবাস ছেড়ে জার্মানির কোলন শহর, আমেরিকার বোস্টন ঘুরে শেষ আবাস নিয়েছিলেন নিউ ইয়র্কে। বারবার বসত বদলানো কবির অভিমানের কথা পরিষ্কার করে আসেনি তার কোনো লেখায় বা বক্তব্যে।
তিনি শুধু লিখেছেন :
“হে আমার শব্দমালা, তুমি কি এখনও বৃষ্টি-ভেজা
বিব্রত কাকের মতো
আমার ক্ষমতাহীন ডাইরির পাতার ভেতরে বসে নিঃশব্দে ঝিমুবে।”
জীবনের অজানা-অচেনা অলি-গলিতে আশার আলোর দেখতে পেলে মনে হয় সত্যিই প্রাণ আছে, আশা আছে, সুখ আছে, ভালোবাসা আছে। কিন্তু সবকিছুর পরও শান্তি আছে কি? কাদরী কবিতায় তারই আভাস দিচ্ছে।
“প্রেমিক মিলবে প্রেমিকের সাথে ঠিক-ই
কিন্তু শান্তি পাবে না, পাবে না, পাবে না...”
(শহীদ কাদরী, সঙ্গতি)
তাহলে কি সঠিক শান্তি বলতে কিছুই নেই! এই ’না’এর মাঝেও ’হ্যাঁ’ অথবা ’হ্যাঁ’ এর মাঝে ’না’ এর অস্তিত্ব যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। আমরা যাকে শান্তি বলে ভাবছি সেখানেও রয়েছে হয়তো এক বিষণ্ণ দেয়াল।
“তবুও এ বিষণ্ণ দেয়াল পেরিয়ে
কেবল লতায় আর গুল্মে ঠাসা এ এ্যাকুরিয়ামে মাছ নেই এ-ও সত্য নয় পুরোপুরি—
আমাদের ভালোবাসার প্রাক্তন প্রহরগুলো আমার কামরার জলে
লাল, নীল, সোনালি মাছের মতো লেজ তুলে ঘুরছে, প্রিয়তমা।”
(শহীদ কাদরী, এ-ও সঙ্গীত)
সেই আপাতত বিষণ্ণ কবি শহীদ কাদরীর কবিতা দেশপ্রেম, স্বাদেশিকতা, আন্তর্জাতিকতাবাদে ঠাসা। রাষ্ট্র জন্মের রক্তাক্ত ইতিহাস, সামরিক বাহিনীর অস্ত্রসজ্জা, যুদ্ধমহড়া এ সবকিছুর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট কবির কবিতায় হাসছে, খেলছে। তাই হয়তো কবি তাঁর প্রিয়তমা দেশকে অভিবাদন জানাচ্ছেন হাতে এক গুচ্ছ গোলাপ, চকলেট, টফি আর অ্যাকর্ডিয়ানের সুরের ভালোবাসা দিয়ে। তীব্র রাজনৈতিক চেতনাবোধে আক্রান্ত এই স্বাপ্নিক কবি এমন একটি প্রিয়তম স্বদেশকে দেখতে চান যেখানে রাষ্ট্রযন্ত্রের কূটকৌশলের সমস্ত বাধা ডিঙিয়ে সেনাবাহিনী গোলাপের গুচ্ছ কাঁধে নিয়ে মার্চপাস্ট করে চলে যাবে এবং স্যালুট করবে, হন্তারকের হাত থেকে পড়ে যাবে ছুরি, আর্কেডিয়ান বাজাতে বাজাতে বিপ্লবীরা দাঁড়াবে শহরে।
‘‘আমি এমন ব্যবস্থা করবো
নৌ,বিমান আর পদাতিক বাহিনী
কেবল তোমাকেই চতুর্দিক থেকে ঘিরে-ঘিরে
নিশিদিন অভিবাদন করবে, প্রিয়তমা’’।
(শহীদ কাদরী, তোমাকে অভিবাদন, প্রিয়তমা)
এযাবৎ প্রকাশিত শহীদ কাদরীর কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা চারটি : ‘উত্তরাধিকার’, ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা , ‘কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই’ এবং ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও। নিউইয়র্কে অবস্থানকালে প্রবাসে রচিত কবিতাগুলো নিয়ে প্রকাশিত হয় ‘আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও’। অন্য তিনটি গ্রন্থের কবিতাগুলো তিনি রচনা করেন দেশছাড়ার আগেই অর্থাৎ ১৯৭৮ সালের মধ্যেই। এই চারটি গ্রন্থে সন্নিবেশিত কবিতার সংখ্যা ১২২টি। এর পরে তিনি আরো চারটি কবিতা লিখেন। সব মিলিয়ে তার কবিতার সংখ্যা ১২৬টি।
নিজের খুব পাশাপাশি থেকে নিজে স্পষ্টত না দেখার অভিমান নিয়ে কোনো তরুণ কবির হাত ছুঁয়ে বলেছিলেন—আমি তোমার হাত ছুঁয়ে নয়, বাংলাদেশের হাত ছুঁয়ে আছি।
আর আমরা অভাগা পাঠক তাঁর স্বল্প কবিতায় কান রেখে হৃদয় ছুঁয়ে আছি তাকে একটি বার না দেখতে পাওয়ার বাসনা নিয়ে। অভিমানী কবি ভালো থাকুক ।