বঙ্গবন্ধুবিষয়ক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/02/01/photo-1548999060.jpg)
বাঙালির প্রাণের মেলা ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ শুরু আজ। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ পয়লা ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকেল ৩টায় বাংলা একাডেমির রবীন্দ্রচত্বরে বইমেলার উদ্বোধন করবেন তিনি; পাশাপাশি এ বছর বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারজয়ী চারজন লেখকের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির মাতৃভাষার জন্য যে আত্মত্যাগ, সেই ত্যাগে উজ্জীবিত এ মেলা চলবে ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী।
এবারের গ্রন্থমেলার প্রতিপাদ্য ‘বিজয় : ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ নবপর্যায়’। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ প্রদান করবেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি। সম্মানিত বিদেশি অতিথি থাকবেন বাংলা ভাষার প্রখ্যাত কবি শঙ্খ ঘোষ (ভারত) এবং প্রখ্যাত লেখক-সাংবাদিক ও গবেষক মোহসেন আল-আরিশি (মিসর)। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
গ্রন্থমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৮ প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানে SECRET DOCUMENTS OF INTELLIGENCE BRANCH ON FATHER OF THE NATION BANGABANDHU SHEKH MUJIBUR RAHMAN (VOLUME-2, 1951-1952)-এর মোড়ক উন্মোচন করা হবে এবং প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত মোহসেন আল-আরিশি রচিত বইয়ের অনুবাদ ‘শেখ হাসিনা : যে রূপকথা শুধু রূপকথা নয়’ তুলে দেওয়া হবে। বইটি আরবি থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা ইসফান্দিওর অরিয়ন। উদ্বোধনপর্ব শেষ হলে গ্রন্থমেলা পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি এবারের বইমেলার পরিসর বেড়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গতবার যেখানে দুই লাখ ৭৫ হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে বইমেলার আয়োজন করা হয়, এবার সেখানে তিন লাখ বর্গফুটজুড়ে বইমেলা হচ্ছে। গ্রন্থমেলায় এবার অংশ নিচ্ছে ৪৯৯টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান।
যথারীতি অন্যবারের মতো এবারও ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা বইমেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা এবং একুশে ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে।
একনজরে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৯
এ বছর বর্ধিত পরিসরে ৪৯৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭০টি ইউনিট এবং বাংলা একাডেমিসহ ২৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ২৪টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ করা হয়েছে। একাডেমি প্রাঙ্গণে আছে ১০৪টি প্রতিষ্ঠান ১৫০টি ইউনিট নিয়ে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৬২০টি ইউনিট নিয়ে থাকবে ৩৯৫টি প্রতিষ্ঠানের স্টল। একাডেমির প্রাঙ্গণে বহেড়াতলায় লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে ১৮০টি লিটল ম্যাগাজিন স্টল পেয়েছে। ব্যক্তি উদ্যোগে প্রকাশিত বই বিক্রি বা প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের স্টলে।
গতবারের মতো এবারও মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে ‘শিশু চত্বর’। মাসব্যাপী প্রতি শুক্র ও শনিবার সকালে ‘শিশুপ্রহর’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি ও মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। বিকাশে বইয়ের মূল্য পরিশোধে থাকবে আরো ১০ শতাংশ মূল্যছাড়।
টিএসসি ও দোয়েল চত্বরের দিকে হচ্ছে গ্রন্থমেলার মূল দুই প্রবেশপথ। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ঢোকা আর বের হওয়া যাবে তিনটি পথ দিয়ে। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য মোট ছয়টি পথ থাকবে।
সমগ্র মেলা প্রাঙ্গণ ও দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি হয়ে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট হয়ে শাহবাগ, দোয়েল চত্বর থেকে শহীদ মিনার হয়ে টিএসসি, দোয়েল চত্বর থেকে চানখাঁরপুল, টিএসসি থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত সড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ বছর থেকেই গ্রন্থমেলায় চমক হিসেবে থাকছে নতুন আয়োজন ‘লেখক বলছি’। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব-পশ্চিম কোণে লেকের পাশে এই মঞ্চে প্রতিদিন পাঁচজন লেখক যোগ দেবেন। তাঁরা নিজেদের প্রকাশিত নতুন বই নিয়ে কথা বলবেন। প্রতি লেখক ২০ মিনিট করে সময় পাবেন। পাঠকের প্রশ্নের জবাবও দেবেন তাঁরা।
এবার মেলার বাংলা একাডেমি অংশ একজন ভাষাশহীদের নামে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চারজন ভাষাশহীদের নামে মোট পাঁচটি চত্বর থাকছে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ এবং স্বাধীনতা স্তম্ভ নিয়ে বিভিন্ন তথ্যসংবলিত প্ল্যাকার্ড বসানো হয়েছে মেলা প্রাঙ্গণে।
যথারীতি ২ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে সেমিনার। এরপর সেই মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। এবার এখানে যুক্ত হয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠের আসর।