মেলায় এসেছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘নেমক হারাম’

এ বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয়েছে কবি ও কথাসাহিত্যিক মাজহার সরকারের লেখা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘নেমক হারাম’।
‘নেমক হারাম’ প্রকাশ করেছে প্রকাশনি সংস্থা ‘তাম্রলিপি’, বইমেলায় বইটি পাওয়া যাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাম্রলিপির প্যাভিলিয়ন নম্বর ১৪তে। প্রচ্ছদশিল্পী চারু পিন্টু, প্রায় ৩০০ পৃষ্ঠার এ বইয়ের মূল্য ৪০০ টাকা।
‘নেমক হারাম’-এর মূল বিষয়বস্তু মুক্তিযুদ্ধ হলেও উপন্যাসে এর কাহিনী শুরু হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনাকাল থেকে। কালনি নদীর তীরবর্তী একটি গ্রামের অন্ত্যজ শ্রেণির এক মাঝি পরিবারের দুই প্রজন্মের মুক্তি-আকাঙ্ক্ষা যুদ্ধের বাস্তবতায় ছড়িয়ে পড়েছে উপন্যাসের পাতায় পাতায়।
পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন রুস্তম তার ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায় সরলাকে। সপ্তাহখানেক পর কালনি গাঙের মাঝি জুলহাস ক্যাম্প আক্রমণ করে উদ্ধার করলেও সরলাকে আর মেনে নেয় না গ্রামবাসী। মুক্তিযোদ্ধা জুলহাস অস্ত্র জমা দিয়ে নেমে পড়ে আরেক মুক্তি আকাঙ্ক্ষায়। এর মধ্যে সরলা গর্ভবতী হয়ে পড়ে, প্রাক্তন প্রেমিকাকে নিয়ে জুলহাস ছুটে বেড়ায় বাংলার গ্রাম থেকে গ্রামে।
বইয়ের নাম ‘নেমক হারাম’ কেন? এ সম্পর্কে মাজহার বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ কোনো সাধারণ যুদ্ধ নয়, এর যুদ্ধের প্রিফিক্স হিসেবে আছে ‘মুক্তি’ শব্দটা। যুদ্ধ শেষ হয়, কিন্তু মুক্তির প্রশ্ন থেকে যায়, থাকে শোষণ-বঞ্চনায় প্রভু বা মালিক এমনকি নিজের বিপরীতেও দাঁড়ানোর গণদাবি। এর বাইরে এটিকে একটি প্রেমের উপন্যাসও বলা যেতে পারে, সেখানেও আছে যুদ্ধাবস্থায় বিশ্বাসঘাতকতা।”
মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস লিখতে কীভাবে উদ্বুদ্ধ হলেন জানতে চাইলে মাজহার বলেন, “আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, জেনেছি অগণিত বই-পুস্তক-পত্রিকা-সাময়িকী পঠন-পাঠনের মধ্য দিয়ে। যুদ্ধকে হৃৎপিণ্ডে ধারণ করেছি, চারপাশ থেকে যুদ্ধের উপকরণ নিয়েছি, তারপর নিজের কল্পনাকে বিস্তার করেছি। তার প্রতিধ্বনি এ উপন্যাস, যুদ্ধ বর্ণনায় নয়- যুদ্ধের পরিণতি নিয়ে। তবে ইতিহাসকে এখানে ব্যবহার করা হয়েছে লবণের মতো, অল্প।”
‘নেমক হারাম’ মাজহার সরকারের দ্বিতীয় উপন্যাস। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি নিয়ে লেখা তার প্রথম উপন্যাস ‘রাজনীতি’। বইটির জন্য তিনি ২০১৬ সালে ‘ব্র্যাক ব্যাংক সমকাল হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার’ পেয়েছিলেন।