অন্তঃসত্ত্বা ও বিবাহিত ছাত্রীদের ঢাবি’র হলে না রাখার বিধান বাতিলে আইনি নোটিশ
অন্তঃসত্ত্বা ও বিবাহিত ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে না থাকার বিধি-বিধান বাতিল চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, শামসুন নাহার হলের প্রভোস্ট, কুয়েত-মৈত্রী হলের প্রভোস্ট এবং সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট বরাবরে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন।
নোটিশে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানতে পারি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ছাত্রী হলে বিবাহিত হওয়ার কারণে কতিপয় ছাত্রীর আবাসিক সিট বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া শামসুন নাহার হলের আবাসিক ছাত্রীদের সিট বণ্টন সম্পর্কিত এবং অন্যান্য শৃঙ্খলামূলক নিয়মবিধির ১৬ নম্বর বিধিতে বলা হয়েছে, কোনো ছাত্রী বিবাহিত হলে অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে জানাবে। অন্যথায় নিয়ম ভঙ্গের কারণে তার সিট বাতিল হবে। শুধু বিশেষ ক্ষেত্রে বিবাহিত ছাত্রীকে চলতি সেশনে হলে থেকে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া হবে। অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রী হলে থাকতে পারবে না।’
নোটিশে আরও বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ বিধানের ফলে কার্যত বিবাহিত শিক্ষার্থীরা হলের আবাসিক সুবিধা গ্রহণ করে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। যে বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারাত্মক অসন্তোষ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে এমন বৈষম্যমূলক বিধান থাকার বিষয়টি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হচ্ছে।’
লিগ্যাল নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং ২৮ (১) ও (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করবে না। রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষ সমান অধিকার লাভ করবে। কিন্তু, বিবাহিত ছাত্রীদের জন্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন নিয়ম নারীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পথে প্রতিবন্ধকতা এবং সংবিধানের ২৭ এবং ২৮ নম্বর অনুচ্ছেদের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। অতএব, অত্র নোটিশ প্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক বিধানটি বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অন্যথায় আমরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হব।’