আইনজীবী-বিচারকদের ড্রেসকোড পরিবর্তনে বৈঠক ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি
দেশব্যাপী তাপপ্রবাহের কারণে আদালতে আইনজীবী ও বিচারকদের ড্রেসকোড পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন প্রধান বিচারপতি। আগামী শনিবার (১৩ মে) বেলা ১১টায় সুপ্রিম কোর্টে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আজ বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকেলে আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ সাইফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে উচ্চ তাপমাত্রার প্রেক্ষাপটে আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ভিন্ন ভিন্ন ড্রেস কোড নির্ধারণের জন্য প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ মূলত একটি গ্রীষ্মপ্রধান দেশ। বছরের প্রায় আট মাস উচ্চ তাপমাত্রা থাকে। আইনজীবীদের আদালতে পরিধানের জন্য সিভিল রুলস অ্যান্ড অর্ডারস, ক্রিমিনাল রুলস অ্যান্ড অর্ডারস, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ রুলস ১৯৭৩ এবং আপিল বিভাগের রুলস ১৯৮৮-তে শীত ও গ্রীষ্মকালে একই ধরনের পোশাক পরিধানের কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে প্রচলিত আইনজীবীদের পোশাকটি মূলত ব্রিটিশ ভাবধারা ও আবহাওয়া বিবেচনায় নির্ধারণ করা হয়েছিল। কালের বিবর্তনে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন হওয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশ গ্রীষ্মপ্রধান দেশ হিসেবে পরিণত হয়েছে। কিন্তু, আইনজীবীদের কল্যাণ ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের সুবিবেচনায় পোশাকের কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।
ফলে দেশের হাজার হাজার আইনজীবী প্রতি বছরের মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত উচ্চমাত্রার গরম আবহাওয়ার কারণে নিদারুণ, অসহনীয়, অবর্ণনীয়, শারীরিক ও মানসিক কষ্ট সহ্য করে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে লাখো লাখো বিচারপ্রার্থীকে আইনি সেবা দিয়ে আসছেন। একইসঙ্গে নিম্ন ও উচ্চ আদালতের বিচারকরা একই ধরনের পোশাক পরিধান করায় অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করে যাচ্ছেন।
অতিরিক্ত গরমে নিয়ম অনুযায়ী, কালো কোট, গাউন, কলার, ব্যান্ড/টাই পরিধানের কারণে প্রতিবছর বহু সংখ্যক আইনজীবী হিট স্ট্রোকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন এবং অনেক আইনজীবী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তীব্র গরম এবং তাপ প্রবাহের কারণে অনেক বয়স্ক আইনজীবী আদালতে যেতে পারেন না। ফলে, অনেক আইনজীবী পেশাগত মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আবেদনে আরও বলা হয়, ইতিপূর্বে করোনা মহামারির সময়ে প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা মোতাবেক ড্রেস কোড পরিবর্তন করা হয়েছিল। তাতে আদালতের বিচারকার্য বা আইনজীবীদের পেশাগত কোনো অসুবিধা হয়নি।
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুর সাড়ে ১২টার ঢাকা জেলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় শফিউল আলম ওরফে আলাউদ্দিন নামে এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে। তার সহকর্মীরা দাবি করছেন, অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোকের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।