আওয়ামী লীগ নেতার ওপর হামলা : কোম্পানীগঞ্জে কাদের মির্জার প্রতিপক্ষদের অবরোধ
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে উপজেলায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ চলছে। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টা থেকে এ অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। এর মধ্যে আজ রোববার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে ও রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল করে অবরোধ পালন করছে আওয়ামী লীগের একাংশ।
এদিকে, এ হামলার ঘটনায় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন বাদলের সমর্থকেরা। পরে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডাকেন ওবায়দুল কাদের ও কাদের মির্জার ভাগ্নে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু।
এদিকে, এ হামলার দায় অস্বীকার করে এক বিবৃতি দিয়েছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা।
বর্তমানে বসুরহাট সড়ক, চাপরাশিরহাট সড়ক, বাংলাবাজারসহ বিভিন্ন সড়কে অবরোধকারীরা সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছেন। এ ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে, গতকাল হামলার ঘটনার পর মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষে চারজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের টেকের বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
বাদলের অনুসারী চরকাঁকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য জামাল উদ্দিন বলছেন, গুলিবিদ্ধরা হলেন চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সদস্য ফখরুল ইসলাম সবুজ (৫৫), তাঁর ছেলে চয়ন (২০), ভাগ্নে আরিয়ান (২৩) ও একই ইউনিয়নের রূপনগর গ্রামের বাসিন্দা হৃদয় (২৮)।
স্থানীয়রা বলছেন, গতকাল শনিবার সকালে মিজানুর রহমান বাদল ও আলালের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে বাদলের অনুসারীরা চরকাঁকড়া ইউনিয়নের টেকের বাজার, বসুরহাট ও পেশকারহাটে সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে। তারপর পুলিশ আওয়ামী লীগনেতা সবুজকে মারধর করলে তাঁর অনুসারীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরপর পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। এতে চারজন গুলিবিদ্ধ হন।
বাদলের ওপর হামলার পর গতকাল সকাল থেকে এ ঘটনায় উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও বসুরহাট পৌরসভার বিভিন্ন জায়গায় কাদের মির্জার বিচার দাবি করে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন অনুসারীরা। বিক্ষোভ থেকে বাদলের অনুসারীরা মেয়র কাদের মির্জার গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, ‘রাস্তায় পুলিশের ওপর আক্রমণ করলে পুলিশ গুলি ছোড়ে।’ তবে এ ঘটনায় কতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, তা তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে এখনও জানা যায়নি। তবে রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়ায় পুলিশ সরাতে গেলে গাড়ি ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পরে পুলিশ শটগানের ২০ থেকে ২২টি গুলি নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় ইট-পাটকেলের আঘাতে চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।’
পুলিশ জানায়, গতকাল সকালে মিজানুর রহমান বাদল ও তাঁর সঙ্গী আসিফ আহসান আলাল বসুরহাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেন। এ সময় বসুরহাট বাজারে ইসলামী ব্যাংকের দক্ষিণ পাশে রাস্তা অবরোধ করে গাড়ি থামিয়ে অতর্কিত হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীরা। এ সময় বাদলের ব্যক্তিগত গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ গাড়িটি উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়েছে।