আটা-ময়দা-ভাতের মাড়ে তৈরি হচ্ছে বিদেশি ব্রান্ডের প্রসাধনী, গ্রেপ্তার ৭
আটা, ময়দা, পাউডার, কেমিকেল, ভাতের মাড় দিয়ে তৈরি হচ্ছিল প্রসাধনী। সুগন্ধী আর রং মিশিয়ে তৈরি এসব প্রসাধনী পরে হয়ে যাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও চীনসহ বিভিন্ন দেশের নামীদামি ব্রান্ডের। তারপর রাজধানীর বিভিন্ন বিপণিবিতানে করা চলছিল সরবরাহ। এমন এক চক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।
গতকাল সোমবার ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নকল প্রসাধনীর কারখানা থেকে ওই সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ মঙ্গলবার ডিবি লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—কারখানার মালিক মো. জাহিদ খান ওরফে বাদশা (২০), কর্মচারী মো. আরিফ হোসেন (২২), মো. নাজিম উদ্দিন ওরফে বিপ্লব (১৮), মো. রবিউল হোসেন ওরফে রবিন (২৬), মো. মারুফ হোসেন (১৬), মো. জামাল হোসেন (৩০) ও মো. হারুন (২৮)। পলাতক রয়েছেন বাড়ির মালিক মো. ছারওয়ার আলম (৫৭) এবং কারখানার অপর দুই মালিক মো. সবুর ইসলাম ওরফে সবুজ ও মো. আবুল কালাম (২৪)।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিবি লালবাগ বিভাগের ডিসি ও সহকারী উপকমিশনারের (এডিসি) নেতৃত্বে অবৈধ মাদক প্রতিরোধ টিম কামরাঙ্গীরচর থানার বালুরমাঠ এলাকার একটি ছয়তলা ভবনের ষষ্ঠ তলার দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেখানে অবৈধভাবে স্থাপিত ঘরোয়া কারখানায় বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল, ফিনিশড নকল বিদেশি হেয়ার অয়েল, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বডি লোশন, হেয়ার কালার, হেয়ার অয়েল, হেয়ার স্পা, ফেসওয়াশ, বিভিন্ন ধরনের ক্রিম এবং বার কোড, কিউআর কোডসহ প্রিন্টেড বিভিন্ন ব্র্যান্ডে প্রসাধনীর বাক্স, টিউব ও বোতল জব্দ করা হয়।
ডিবি বলছে, সবুজ, কালাম ও বাদশা কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা। এই তিন ভাই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মচারীদের এখানে নিয়ে আসেন। তাঁদেরকে প্রধান কেমিস্ট, সহকারী কেমিস্ট এবং শ্রমিক হিসেবে নিজেদের কারখানায় নিয়োগ দেন।
স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত বিভিন্ন আঠা, আটা, ময়দা, পাউডার, কেমিকেল, পানি, ভাতের মাড় ও মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনী ইত্যাদির সঙ্গে রং মিশিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, কোরিয়া ও থাইল্যান্ডের নামীদামি ব্র্যান্ডের বিভিন্ন ধরনের তেল, ফেসওয়াশ, ত্বক ফরসাকারী ক্রিম, লোশন, ক্রিম ও শ্যাম্পু তৈরি করে। পরে এগুলো চকবাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন সুপারশপে বিক্রি করে আসছিল চক্রটি। তাদের এ কাজে সহযোগিতা করতেন চকবাজারের বিভিন্ন পাইকারি দোকানিরা।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীরচর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে। পলাতক আসামিসহ জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।