আহতদের রক্ত দিতে হাসপাতালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ও আহত ব্যক্তিদের রক্তের প্রয়োজন মেটাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে গিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কয়েকশ শিক্ষার্থী।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, আজ রোববার ভোরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি বাসে করে ওই শিক্ষার্থীরা চমেক হাসপাতালে যান।
এর আগে দগ্ধ ও আহত ব্যক্তিদের জন্য রক্তের প্রয়োজন বলে জানিয়েছিল চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সীতাকুণ্ডে ওই কনটেইনার ডিপোতে আগুনের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের তিন সদস্য রয়েছেন বলে জানা গেছে। জেলা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন মরদেহ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, এ বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ও আহত ব্যক্তির সংখ্যা দেড় শতাধিক বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪৩ জন এবং পুলিশের ১৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার রাত ৯টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের পর এ বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত চার কিলোমিটার এলাকা। এ ছাড়া আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ে।
এদিকে, বিস্ফোরণের পর ১১ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কনটেইনারে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
আগুন নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে ঘটনাস্থলে চট্টগ্রাম মহানগরীর সব ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কাজ করছে। এ ছাড়া কুমিল্লা ও ফেনীসহ আশপাশের এলাকার ফায়ার সার্ভিসও যোগ দিয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণে।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে আজ রোববার এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো কর্মচঞ্চল এ কনটেইনার ডিপোটিতে হঠাৎ গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে। কেমিক্যালের কয়েকটি কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তেই আশপাশের চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার এলাকার অনেক বাসা-বাড়ির জানালার কাঁচও ভেঙে পড়ে এ বিকট শব্দে। এর মধ্যে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হতাহত বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু, ডিপোটিতে থাকা কিছু কনটেইনারে রাসায়নিক পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্টদের।
এ ঘটনার পর আহত ব্যক্তিদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে, একসঙ্গে এত রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম অবস্থা চমেক হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। পরে চট্টগ্রামের জেনারেল হাসপাতাল, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালসহ (সিএমএইচ) বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আহত ব্যক্তিদের পাঠানোর উদ্যোগ নেয় প্রশাসন।
এদিকে, মানবিক কাজে সব স্বাস্থ্যকর্মী এগিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী। এ ছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতালসহ সব চিকিৎসককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও বিভাগীয় প্রশাসন।