ইউএনওর থাপ্পরে কান ফাটল সাবেক ভাইস চেয়ারম্যানের!
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মিজানুর রহমানকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার (১ মার্চ) দুপুরে ফকিরহাট সদরের কাঁঠালতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শেখ মিজানের ছোট ভাই শেখ সিরাজুল ইসলামের অভিযোগ, ঘটনার পর শেখ মিজানকে প্রথমে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর কান থেকে রক্তক্ষরণ মারাত্মক আকার ধারণ করলে তাঁকে সন্ধ্যায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
শেখ সিরাজুল ইসলাম জানান, আজ দুপুরে শেখ মিজানুর রহমান নিজের গরুর খামারে যাওয়ার পথে কাঁঠালতলা মোড়ে তাঁর মোটরসাইকেলে থাকা ফুলের ঝাড়ু ইউএনওর গাড়িতে লেগে যায়। এ সময় ইউএনওর গাড়িচালক বাদশা আলম তাকে ধমক দেন। একপর্যায়ে ইউএনও গাড়ি থেকে নেমে লোকজনের সামনে তাঁকে থাপ্পর মেরে কান ফাটিয়ে দেন। এরপর জোর করে তাঁকে গাড়িতে তুলে পাইকপাড়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত নিয়ে যান। তাঁকে গাড়িতে অবরুদ্ধ করে রেখে ইউএনও একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনগণ জড়ো হয়ে এর প্রতিবাদ করতে থাকে। প্রায় এক ঘণ্টা পর পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভাইকে ছেড়ে দেওয়ার পর আহত অবস্থায় ফকিরহাট উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। রক্তক্ষরণ না থামায় তাঁকে সন্ধ্যায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।’
ভুক্তভোগী সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মিজানুর রহমান বলেন, আমি মোটরসাইকেলযোগে ফুলঝাড়ু নিয়ে যাওয়ার পথে তা ইউএনও গাড়িতে সামান্য স্পর্শ হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়ি থেকে নেমে থাপ্পর মেরে আমার কান ফাটিয়ে দিয়েছেন। এরপর জোর করে গাড়িতে তুলে পাইকপাড়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত নিয়ে যান। খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে এর প্রতিবাদ করতে থাকলে প্রায় এক ঘণ্টা পর আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
ফকিরহাটের ইউএনও মো. মনোয়ার হোসেন ঘটনাটি অস্বীকার করে জানান, তাঁর গাড়ির সঙ্গে মিজানুর রহমানের মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগলে তিনি তাঁকে তাঁর সরকারি গাড়িতে উঠতে বলেন। এ সময় তিনি গাড়িতে উঠতে অসম্মতি জানান। পরে তাঁকে গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। তাঁর পরিচয় জানার পর দুঃখ প্রকাশ করে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ‘একজন ইউএনওর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যানের গায়ে হাত তোলার বিষয়টি কাম্য নয়। কেউ আইন হাতে তুলে নিতে পারেন না। কেউ অপরাধ করলে আইনের বিধি-বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হয়। প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।’