গোপালগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানকে মারধর
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে হোল্ডিং ট্যাক্সের টাকা তোলাকে কেন্দ্র করে মহেশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. লুৎফর রহমান মিয়া লুথুকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তারই পরিষদের কয়েকজন ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গোপালগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান নির্বাচনের সময়ে হোল্ডিং ট্যাক্স ওঠাতে নিষেধ করে দেন। কিন্তু মহেশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান লুথু মিয়া সংসদ সদস্যের আদেশ অমান্য করে গোপনে হোল্ডিং ট্যাক্স উত্তোলন করেন। এ ঘটনায় আজ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মহেশপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. আলিম মোল্লা, ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার মিজান ফকির, ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার সাকায়েত মোল্লা ও ৪, ৫, ৬নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের মেম্বার রাজিয়া বেগমের স্বামী সাবেক মেম্বার হাবিব ফকির হোল্ডিং ট্যাক্সের টাকা উত্তোলনের কারণ জানতে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আসেন। এ নিয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এরপর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে চেয়ারম্যান তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে মহিলা মেম্বারের স্বামী সাবেক মেম্বার হাবিব ফকিরকে লাথি মারেন চেয়ারম্যান।
এ ঘটনার পরে সব মেম্বাররা ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যানকে মারধর করে। লাথিমারার খবর ছড়িয়ে পড়লে ইউপি মেম্বারদের উত্তেজিত সমর্থকরা মারমুখী হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের দিকে তেড়ে আসে। চেয়ারম্যান দ্রুত তার কক্ষে ঢুকে ভেতর দিয়ে দরজা আটকে দেয়। পরে পুলিশকে খবর দেয় চেয়ারম্যান। কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিল্লুর রহমান ঘটনাস্থলে এসে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে। পরে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয় পুলিশ।
মহেশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. লুৎফর রহমান মিয়া লুথু বলেন, ‘ওই ইউপি মেম্বাররা নির্বাচনের আগে এমপি মুহাম্মদ ফারুক খান ও আমার কাছ থেকে নৌকার পক্ষে কাজ করার কথা বলে টাকা নেয়। কিন্তু তারা সে অনুযায়ী কাজ করেনি। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে শুধু কথাকাটাকাটি ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। কিন্তু কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।’
সাবেক মেম্বার হাবিব ফকির বলেন, ‘গোপালগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের ডেকে সাময়িকভাবে ট্যাক্স ওঠানো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এমপি সাহেবের নির্দেশ অমান্য করে হোল্ডিং ট্যাক্সের টাকা উত্তোলন করেছেন চেয়ারম্যান। তার কাছে এ বিষয় নিয়ে জানতে চাওয়া হলে, তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের অকথ্যভাষায় গালাগাল করেন। একপর্যায়ে আমাকে লাথি মারেন। পরে এঘটনায় উপস্থিত অন্যান্য মেম্বারসহ আমি তাকে মারধর করি।’
ওসি মো. জিল্লুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ট্যাক্স কালেকশন নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। উভয় পক্ষকে এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করা হয়েছে। এ ঘটনায় সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি কোনো পক্ষই।’