ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন : জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি গঠন
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রী নির্যাতনের অভিযোগের ঘটনা তদন্তে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
গতকাল রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে তিন সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়।
সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘রোববার বিকেলে উচ্চ আদালতের নির্দেশ আমার কাছে পৌঁছালে রাতেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।’
কমিটির সদস্যরা হলেন—কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আ ন ম আবুজর গিফারী, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহবুব আলম।
কমিটির সদস্য সহকারী অধ্যাপক শাহবুব আলম বলেন, ‘কমিটির সদস্যরা আজ (সোমবার) থেকেই কাজ শুরু করে দেবেন।’
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনায় আইনজীবী গাজী মো. মহসীনের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসককে তিন সদস্যবিশিষ্ট এই তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলেছেন হাইকোর্ট। কমিটি গঠনের সাত দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
হাইকোর্টের আদেশে তদন্ত চলাকালে অভিযুক্ত দুজনকে হল ও ক্লাসের বাইরে রাখতে এবং নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ভুক্তভোগী চাইলে মামলা করতে পারবেন এবং মামলা নিতে ইবি থানা বাধ্য থাকবে বলেও আদেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের করা কমিটির প্রতিবেদনও ১০ দিনের মধ্যে দাখিল করতে বলেছেন আদালত।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় ও ওই হল কর্তৃক গঠিত দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছেন। আজ সোমবার অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগী ফিনান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের ছাত্রী তাবাচ্ছুম ইসলামকে ডেকেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি।
এর আগে, শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই নির্যাতিতা শিক্ষার্থী জবানবন্দি নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের তদন্ত কমিটি। এদিন পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক রেবা মণ্ডলের নেতৃত্বে তদন্ত দল নির্যাতিতা ছাত্রীর সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলেছেন।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের গণরুমে গত রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে ছাত্রলীগ নেত্রীরা নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ তুলেন প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রী। ভুক্তভোগী ছাত্রীর ভাষ্যমতে, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী ও তার অনুসারীরা নির্যাতন চালিয়েছেন। নির্যাতনের সময় তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল ও এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে।’
গতকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর, হলের প্রভোস্ট ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। এদিকে, প্রশাসনের কাছে পাল্টা লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী।