ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতিকে ওয়ার্কার্স পার্টির ৬ প্রস্তাব
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে মতামত দিতে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়।
এ সময় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, রাজনীতিতে গুণগত মান নিশ্চিত করা না গেলে ভবিষ্যতে রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি করা কঠিন হয়ে যাবে।
ওয়াকার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য ‘রাজনীতি হচ্ছে জনগণের কল্যাণের জন্য। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোকে তৃণমূল পর্যায়ে সঠিক জনমত গড়ে তুলতে হবে।’ উদ্ধৃত করে প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন জানান, নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বঙ্গভবনে চলমান সংলাপের পঞ্চম দিনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আজ সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়। সেখানে প্রতিনিধিদলের নেতারা একটি স্বাধীন নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য ছয়টি প্রস্তাবনা রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করেন।
রাষ্ট্রপ্রধান একটি স্বাধীন নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ইসি গঠনের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা কামনা করেন উল্লেখ করে প্রেস সচিব জানান, প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ায় রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানায়। তারা নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে ছয় দফা প্রস্তাব পেশ করে।
প্রতিনিধিদলের নেতারা বলেন, নির্বাচন কমিশন যাতে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণমুক্ত ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।
প্রতিনিধিদলের নেতারা বছরের শুরুতেই জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের জন্য প্রস্তাব করেন। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন থেকে নির্বাচনি আইনগুলোর যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার ব্যাপারে মতামত দেন।
ওয়ার্কার্স পার্টি নির্বাচন কমিশন গঠনে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মতামত গ্রহণেরও প্রস্তাব দেয়।
এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গত ২০ ডিসেম্বর সংলাপের প্রথম দিনে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপ করেন।
এ পর্যন্ত মোট সাতটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আগামীকাল বুধবার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) সঙ্গে এবং ইসলামী ঐক্যজোট সঙ্গে ওই দিন সন্ধ্যা ৬টায়। গণফোরামের সঙ্গে বৈঠক হবে আগামী ২ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় এবং বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সঙ্গে সন্ধ্যা ৭টায়। আগামী ৩ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় সংলাপ হবে গণতন্ত্রী পার্টির সঙ্গে এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সন্ধ্যা ৭টায়।
অন্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি।
এর আগে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
রাষ্ট্রপতিকে সিইসি এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েকটি মেয়াদে রাষ্ট্রপতি ‘সার্চ কমিটি’র সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।
বর্তমান ইসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।