ঈদযাত্রায় শিমুলিয়া ঘাটের রাস্তাজুড়ে মোটরসাইকেল
ঈদ উপলক্ষ্যে ঘরে ফেরাদের বাহনের তালিকায় আজ বেশির ভাগের পছন্দ যেন মোটরসাইকেল। ভোর থেকে সহস্রাধিক মোটরসাইকেল পদ্মা পার হয়েছে। এর আগে-পরে মোটরসাইকেল দখল করে রাখে ফেরিঘাটের রাস্তা। বাইকের সংখ্যা বেশি হওয়ায় একটি ঘাটকে করতে হয়েছে নির্দিষ্ট। সে ঘাট দিয়ে শুধু মোটরসাইকেল পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে—মোটরসাইকেলের দৌরাত্ম্যে এ রুটে ব্যক্তিগত গাড়ি, ভাড়ায় প্রাইভেট কার কিংবা মাইক্রোবাসও এগোতে পারছে না। যদিও আজ শনিবার বড় গাড়ি ও ছোট গাড়ির সংখ্যা অন্য যেকোনো দিনের তুলনায় কম।
জানা গেছে, গতকালের মতো আজও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার-মাঝিকান্দি নৌপথে ছোট বড় মিলিয়ে ১০টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। পাশাপাশি রয়েছে ৮৫টি লঞ্চ ও ১৫২টি স্পিডবোটসহ আটটি ট্রলার।
সেহরির পর থেকে ঘাট এলাকায় বাড়তে থাকে ঘরমুখোদের ভিড়। যদিও ঘাট এলাকায় সে সব যানবাহনের সংখ্যা ভোরের দিকে ছিল স্বাভাবিক। বেলা বাড়ার সঙ্গে যানবাহনের সারি দীর্ঘ হতে শুরু করে। এদিকে, স্পিডবোট ও লঞ্চঘাটেও যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় রয়েছে। এতে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে, ভাড়া বেশি লাগলেও বাড়ি ফিরতে পেরে আনন্দিত যাত্রীরা।
শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে কোলে শিশুসন্তান নিয়ে ফেরি ঘাটে বসেছিলেন নুসরাত আরিফিন। তিনি বলেন, ‘মাদারীপুর যাব। কিন্তু, ফেরির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অথচ যানবাহনের তেমন কোনো ভিড় নেই। কিন্তু, ফেরি কম থাকায় সময়মতো ফেরি পাওয়া যাচ্ছে না বলে আমার মনে হয়।’
নুসরাত বলেন, ‘আগে থেকে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো উচিত ছিল। যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে যাত্রী পারাপারের জন্য ফেরি বাড়ানো দরকার ছিল।’
নাজমুল হাসান মিরপুর থেকে বাসে করে দেড় ঘণ্টায় মাওয়া ঘাটে পৌঁছান। এখন পদ্মা পার হবেন লঞ্চে। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বরিশাল যাব। রাস্তায় কোনো সমস্যা হয়নি। লঞ্চঘাটে প্রচুর যাত্রী অপেক্ষা করছে। একটু কমলে পরে নদী পার হব।’
হান্নান মিয়া সপরিবারে বরিশাল যাবেন। ঢাকা থেকে মাইক্রোবাসে করে আজ ভোরে রওনা হয়েছেন। তবে, ফেরির কোনো দেখা নেই। তিনি বলেন, ‘কখন ফেরি পাব ঠিক নেই। কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল সংখ্যা বাড়ানো। যেহেতু ঢাকার অদূরে রাস্তাঘাট ভালো থাকায় পছন্দের ঘাট হলো শিমুলিয়া ঘাট।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) শিমুলিয়া বন্দর কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সকাল থেকে যাত্রীদের চাপ রয়েছে খুব বেশি। স্পিডবোট ও লঞ্চঘাট এলাকায় পা ফেলার মতো জায়গা নেই। ভোর থেকে ১৫২টি স্পিডবোট ও ৮৫টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।’
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. ফয়সাল এনটিভি অনলাইনকে জানান, বর্তমানে মোট ১০টি ফেরি পারাপারে কাজ করছে। সকাল থেকে এ পর্যন্ত তিন শতাধিক গাড়ি পারাপার হয়েছে। ঘাট এলাকায় প্রায় পাঁচ শতাধিক যানবাহন রয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেশি হওয়ায় ১ নম্বর ফেরিঘাট দিয়ে শুধু মোটরসাইকেল পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকাল থেকে প্রায় হাজারের মতো মোটরসাইকেল পারাপার করা হয়েছে।’