এবার বগুড়ার ভিএম স্কুলের সেই প্রধান শিক্ষকও প্রত্যাহার
বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের (ভিএম স্কুল) শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দেওয়ার হুমকি এবং দুই শিক্ষার্থীর মাকে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করায় অভিযুক্ত বিচারককে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এবার সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনকেও প্রত্যাহার করা হয়েছে। ওই প্রধান শিক্ষককে প্রত্যাহার করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আজ রোববার (৯ এপ্রিল) মাউশির সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-১) দুর্গা রানী সিকদার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
ওই প্রজ্ঞাপনে আজ থেকে রাবেয়া খাতুনকে নিজ কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক বিমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন ওই প্রধান শিক্ষক। যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এমন কোনো চিঠি আমি পাইনি। আর বিষয়টি আমার জানা নেই।’
গত ২০ মার্চ অতিরিক্ত দায়রা জজের মেয়ের বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়া নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব হয়। পরে অতিরিক্ত দায়রা জজের মেয়ে বাসায় গিয়ে ফেসবুকে কটূক্তিমূলক স্ট্যাটাস দেন। সেই কটূক্তিমূলক স্ট্যাটাসে তার সহপাঠীরাও কটূক্তিমূলক মন্তব্য করে। এর জেরে ২১ মার্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার মাধ্যমে মেয়ের সহপাঠীদের অভিভাবকদের বিদ্যালয়ে ডেকে এনে দুই অভিভাবককে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগ ওঠে অতিরিক্ত দায়রা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই স্কুলের সব শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা স্কুলের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে ওই দিন রাত ৯টার দিকে বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী ফোনে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামকে জানান, অতিরিক্ত জেলা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বিষয়টি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের জানালে তারা শান্ত হন এবং স্কুল ত্যাগ করেন।
ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ অতিরিক্ত দায়রা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনের বদলির আদেশ দেন। আর আজ বদলি করা হয়েছে স্কুলটির প্রধান শিক্ষককে।
এদিকে, উদ্ভূত ওই পরিস্থিতির জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটিতে অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি), সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে রাখা হয়েছে। তবে, কমিটি এখনও তাদের কার্যক্রম শুরু করেনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, ‘তদন্ত কমিটিকে কার্যক্রম শুরুর পর আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আমরা সেভাবেই কাজ করছি।’