এমসি কলেজে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ : জবানবন্দির পর ৩ আসামি কারাগারে
সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পর তিন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এরা হলেন মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, ৪ নম্বর আসামি অর্জুন লস্কর ও ৫ নম্বর আসামি রবিউল ইসলাম।
আজ শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে এই তিন আসামিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালত চত্বরে নিয়ে আসে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান (রহ.) থানা পুলিশ। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার পক্ষ থেকে তিন আসামির জবানবন্দি গ্রহণের আবেদন করা হয়।
সিলেট মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট-১ আদালতের বিচারক জিয়াদুর রহমান তাঁর খাস কামরায় প্রথমে আসামি অর্জুনের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। এরপর সেখানে জবানবন্দি দেন আসামি সাইফুর। অপরদিকে সিলেট মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট-২ আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান আসামি রবিউলের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি-প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জবানবন্দি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, স্বামীকে নিয়ে ঘুরতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় এমসি কলেজে গিয়েছিলেন এক গৃহবধূ। এ সময় কলেজ ক্যাম্পাস থেকে পাঁচ থেকে ছয়জন তাঁদের জোরপূর্বক কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যান। সেখানে একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণ করেন তাঁরা। পরে ওই গৃহবধূকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় পরের দিন ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন সাইফুর রহমান (২৮), শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), তারেক (২৮), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও মাহফুজুর রহমান মাছুম (২৫)।
তাঁদের মধ্যে সাইফুর রহমান বালাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা, রনির বাড়ি হবিগঞ্জে, তারেক সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাসিন্দা, অর্জুনের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জে, রবিউলের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় আর মাহফুজুর রহমান মাছুমের বাড়ি সিলেটের সদর উপজেলায়।
এরপর গত ২৭ সেপ্টেম্বর প্রধান আসামি সাইফুর রহমানকে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা থেকে, অর্জুন লস্করকে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মনতলা এলাকা এবং হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা থেকে রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরের দিন ২৮ সেপ্টেম্বর এই তিন আসামিকে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক সাইফুর রহমান তিনজনের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সেই রিমান্ড শেষে তাদের আজ আদালতে হাজির করে জবানবন্দির আবেদন করা হয়।