কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা, খাটের নিচে রেখে পালায় ধর্ষক
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2022/03/16/ctg_alamgir.jpg)
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী (১৩) কোচিং শেষে বাসায় যায়। বাসায় যাওয়ার পর পাশের ফ্ল্যাটের আলমগীর মিয়া (৩৮) নামের এক ব্যক্তি তাকে তার বাসায় নিয়ে যায়। তারপর কিশোরীকে ধর্ষণ করে আলমগীর। এক পর্যায়ে নিজেকে রক্ষা করতে ভুক্তভোগী আলমগীরের আঙুলে কামড় দিয়ে ঘটনাটি বাবা-মাকে জানিয়ে দেবে বলে জানায় কিশোরী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আলমগীর ভুক্তভোগীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ১৩ মার্চ চট্টগ্রামের হালিশহরে এ ঘটনা ঘটে।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
খন্দকার আল মঈনের দাবি, কিশোরীকে হত্যার পর খাটের নিচে রেখে ঘরের তালা মেরে বের হয়ে যান আলমগীর। এরপর তার স্ত্রী যে গার্মেন্টেসে চাকরি করে, সেখানে যায়। আলমগীর স্ত্রীকে জানান, তার সঙ্গে এলাকার একজনের মারামারি হয়েছে। এই অজুহাত দেখিয়ে তিনি স্ত্রীসহ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতিদিনের মতো ভুক্তভোগীর মা সকালে পোশাক কারখানায় চলে যান। বাবাও রিকশা নিয়ে বেরিয়ে যান কাজে। দুপুরে কিশোরীর মা বাসায় খাবার খেতে আসেন। কিন্তু, মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এরপর কিশোরীর একই স্কুলের দুই সহপাঠী তার মাকে জানায়, সে প্রাইভেট পড়ার পর স্কুলে যায়নি। এরপর আলমগীরকে খুঁজতে শুরু করে কিশোরীর মা।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘কিন্তু কোথাও আলমগীরকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অন্যান্য দিনের মতো তার স্ত্রীও দুপুরে খাবার খেতে বাসায় আসেনি। বাসা তালাবদ্ধ। আলমগীরকে ফোন করলে তার মোবাইলটিও বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে কিশোরীর বড়ভাই আলমগীরের তালাবদ্ধ বাসার লাইট ও ফ্যান চালু দেখলে আরও সন্দেহ হয় তাদের। বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন এবং তখন আনুমানিক রাত সাড়ে নটার দিকে তারা দরজার তালা ভেঙে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে দেখেন, খাটের নিচে ভুক্তভোগী কিশোরী হাত পা বাধা অবস্থায় পড়ে ছিল। পরিবার জানায়, ভুক্তভোগীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও ধর্ষণের আলামত দেখতে পাওয়া যায়। এরপর কিশোরীকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঘটনার পর ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে হালিশহর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। এরপর র্যাব তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার ভোরে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাকে ডেমরা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামলার আসামি আলমগীর ধর্ষণের পর হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আলমগীর জানান, তিনি আগে সাভারের একটি গার্মেন্টসে ডিজাইনের কাজ করতেন। বিয়ে করেছেন দুটি। পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে আলমগীর সাভার থেকে তিন মাস আগে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে চট্টগ্রামের হালিশহর বসবাস শুরু করে। আলমগীরের দ্বিতীয় স্ত্রীও একজন গার্মেন্টসকর্মী। আগেও আলমগীরের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে। তবে, টাকার বিনিময়ে সেই ঘটনা মিটিয়ে ফেলেন আলমগীর।