কোম্পানীগঞ্জে কাদের মির্জার বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল, সংঘর্ষে ওসিসহ আহত ৭
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আনছার উল্যাহকে (৬৫) মারধরের প্রতিবাদে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল নিয়ে বিক্ষোভ করা হয়েছে। বিক্ষোভে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষের ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) সাত জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া, মিছিল পরবর্তী সমাবেশ পুলিশি বাধায় পণ্ড হয়ে যায়।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বামনীবাজারে ঝাড়ু মিছিল করেন ইউপি চেয়ারম্যানপ্রার্থী কাদের মির্জার ভাগনে সিরাজিস সালেকিন রিমনের সমর্থকেরা। তাঁরা এ ঘটনার জন্য কাদের মির্জার বিচার দাবি করে শ্লোগান দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিবদমান দুপক্ষের দ্বন্দ্ব।
সিরাজিস সালেকিন রিমনের অভিযোগ, ‘আমার পক্ষে ভোট করায় উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আনছার উল্যাহকে মারধর করেছেন কাদের মির্জা।’
এর আগে গতকাল বুধবার দুপুর ২টার দিকে বসুরহাট পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চরকাঁকড়া গ্রামের মরহুম দর্জি ওবায়দুল হকের বাড়িতে কুলখানি অনুষ্ঠানে বিএনপিনেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আনছার উল্যাহকে মারধরের অভিযোগ ওঠে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে।
কুলখানি অনুষ্ঠানে বিএনপিনেতাকে মারধরের খবর ছড়িয়ে পড়লে রামপুর ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষ ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে জানতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মো. সাজ্জাদ রোমন বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে খবর পেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়। এ সময় দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ তাদের বামনীবাজার থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় দুপক্ষের লোকজন আমিসহ সাত পুলিশ সদস্যকে আহত করে।’
ওসি আরও বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দেড়শ জনকে আসামি করে মামলা করেছে।’
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আনছার উল্যাহ’র অভিযোগ, গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে তিনি বসুরহাট পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মরহুম দর্জি ওবায়দুল হকের কুলখানি অনুষ্ঠানে যান। এ সময় ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এরপর আনছার উল্যাহ তাঁকে ওই অনুষ্ঠানে আসতে দেখে উঠে সম্মান প্রদর্শন করে অন্য একটি জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় কাদের মির্জা কিছুক্ষণ ওই স্থানে বসে থাকেন।
আনসার উল্যাহ বলেন, ‘এক পর্যায়ে কাদের মির্জা উঠে এসে ভোট চুরির অভিযোগ তুলে আমার মুখে থাপ্পড় দেন। থাপ্পড়ের সঙ্গে সঙ্গে আমার চশমা চোখ থেকে খুলে মাটিতে পড়ে যায় এবং আমার মুখ ছিড়ে যায়। এরপর আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন কাদের মির্জা। এরপর আরও উত্তেজিত হয়ে আবার আমাকে থাপ্পড় দিয়ে গা থেকে চাদর ফেলে দেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের মির্জার ভাগনে রামপুর ইউপি নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী সিরাজিস সালেকিন রিমন বলেন, ‘আমার ভোট করায় উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আনছার উল্যাহকে মারধর করেন কাদের মির্জা। এ ঘটনা শুনতে পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আমি তাঁকে দেখতে যাই। ভুক্তভোগী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এ ঘটনায় আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার সমর্থককে মারধর করায় উত্তেজিত লোকজন সন্ধ্যায় রামপুর ইউনিয়নের বামনীবাজারে ঝাড়ু মিছিল করেছে।’