কোম্পানীগঞ্জে হরতাল চলছে, কাদের মির্জার সমর্থকদের পিকেটিং
জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও পরিদর্শককে (তদন্ত) প্রত্যাহারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আধাবেলা হরতাল পালিত হচ্ছে।
বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার ডাকে এ হরতালে পিকেটিং করছে তাঁর সমর্থকরা। রাজপথে তারা মিছিলও করেছে। হরতালের কারণে উপজেলা সদরের সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। হরতালকারীরা রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
তবে হাসপাতাল ও সংবাদপত্রবাহী গাড়ি, ব্যাংকসহ জরুরি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হরতালের আওতার বাইরে রয়েছে। সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া হরতাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছে হরতালকারীরা।
গত মঙ্গলবার রাতভর কোম্পানীগঞ্জ থানা অবরোধ করে রাখার পর গতকাল বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন দাবিতে উপজেলার সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করে পৌর মেয়রের সমর্থকরা সেখানে হরতাল পালন করে।
পরে দুপুরে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বসুরহাট পৌরসভার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহারের সাময়িক ঘোষণা দিয়ে বলেন, দাবি মানা না হলে আবার হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি দেওয়া হবে। এ সময় তিনি কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ফের হরতাল পালন করা হবে। তিনি আরও বলেন, শুক্রবার সারাদিন থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সকাল থেকে কোম্পানীগঞ্জে আধাবেলার হরতাল চলছে।
নিজের দাবির কথা তুলে ধরে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আমার দাবি অনুযায়ী, ফেনীর সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, নোয়াখালীর এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর অপরাজনীতি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি, পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল হককে প্রত্যাহার এবং চরকাঁকড়ার আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম ওরফে সবুজকে গ্রেপ্তার করতে হবে। শপথ নিতে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে তাঁর গাড়িবহরে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন মেয়র।
এদিকে, হত্যা করা হতে পারে—এমন আশঙ্কা করে গত মঙ্গলবার কোম্পানীগঞ্জ থানায় নিজে বাদী হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন আবদুল কাদের মির্জা।
সূত্র জানায়, অজ্ঞাতস্থান থেকে ফেসবুক লাইভে এসে তাঁকে গালিগালাজ করলে চরকাঁকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এরপর পুলিশ ওই নেতাকে আটক করে পরে আবার ছেড়ে দিলে আবদুল কাদের মির্জা ক্ষুব্ধ হয়ে থানার সামনে মঙ্গলবার রাত থেকে অবরোধ শুরু করেন।
গতকাল বুধবার গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে মেয়র অভিযোগ করে বলেন, তাঁকে, তাঁর পরিবারের সদস্য ও সমর্থকদের হত্যা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য ৫০ কোটি টাকার ফান্ডও করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বসুরহাটের মেয়র দাবি করেন, এসবের সঙ্গে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা জড়িত। তিনি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল, চরকাঁকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজ, রাহাত, রবিউল প্রমুখের গ্রেপ্তারের দাবির পাশাপাশি নোয়াখালীর অপরাজনীতি বন্ধের দাবিও জানান।