কোর্ট-কাচারি নিয়ে ফাজলামো নাকি : হাইকোর্ট
লকডাউন চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করে বারবার বলার পরও শুনানিতে অংশ না নেওয়ায় আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। আইনজীবীর অনুপস্থিতির কারণে রিটটি খারিজ করে এ আদেশ দেওয়া হয়।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দু কুমার রায় ও বিপুল বাগমার উপস্থিত ছিলেন।
সারা দেশে চলমান ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ স্থগিতের পাশাপাশি সরকারিসহ সব অফিস খুলে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ গত ২৫ এপ্রিল ওই রিট দায়ের করেন।
রিটকারি হাইকোর্টের এ বেঞ্চে ২৭ এপ্রিল রিটটি উপস্থাপন করলে তা কার্যতালিকায় ওঠে। ২ মে ক্রম অনুসারে বিষয়টি উঠলে আদালত বলেন, ‘নট টুডে (আজ নয়), পরবর্তী দিন (মঙ্গলবার) বিষয়টি আদেশের জন্য আসবে।’ তখন রিট আবেদনকারি ইউনুছ আলী আকন্দকে দেখা যায়নি। এর ধারাবাহিকতায় আজ আদেশ দেওয়া হয়।
আজ ক্রম অনুসারে বিষয়টি উঠলে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দকে আদালতে দেখা যায়নি। এ অবস্থায় আইনজীবীর অনুপস্থিতির কারণে রিট খারিজ করা হলে কস্ট (জরিমানা) আরোপ করা যায় কি না, সে বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খানের মত শোনেন আদালত।
আদেশের আগে আদালত বলেন, ‘লকডাউন চ্যালেঞ্জ করে আবেদন (রিট) জমা দিয়ে উনি (ইউনুছ আলী আকন্দ) চার-পাঁচ দিন নেই। মাঝে মাঝে উঁকি দেন, মামলা ধরলে থাকেন না।’
আদালত রিট খারিজ করে কস্ট (জরিমানা) আরোপের কথা বলেন। তখন উপস্থিত অন্য আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেন, ‘কস্ট মাফ করে দেওয়া যায় না!’
আদালত বলেন, ‘কেন মাফ করব? কোর্ট-কাচারি নিয়ে ফাজলামো নাকি? লকডাউনের মধ্যে একটি মামলা করেছেন, ওনাকে (ইউনুছ) এক দিনও পাওয়া যায় না। উনি মামলা করে মিডিয়ায় আগে বলে দেন, মামলা দায়ের করা হয়েছে। চার-পাঁচ দিন ধরে মামলাটি (রিট) কার্যতালিকায় রয়েছে। উনি (ইউনুছ) আসেন না। অনুপস্থিতির কারণে রিটটি খারিজ করা হলো। ১০ হাজার টাকা কস্ট আরোপ করা হলো।’
এর আগে আলোচিত বিষয় নিয়ে ‘জনস্বার্থের’ নামে রিটকারী আইনজীবী হিসেবে পরিচিত অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ গত বছরের ১২ অক্টোবর ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা নিয়ে ফেসবুকে কটাক্ষ করে স্ট্যাটাস দেন। এতে গুরুতর আদালত অবমাননা হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দকে দোষী সাব্যস্ত করেন আপিল বিভাগ। এ ঘটনায় তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একইসঙ্গে তাকে তিন মাসের জন্য আইনপেশা থেকে বরখাস্ত করেন আদালত।