চট্টগ্রামে বিএম ডিপোর অগ্নিকাণ্ডে মালিকপক্ষ দায়ী : তদন্ত কমিটি
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর বিস্ফোরণে প্রাণহানির ঘটনায় মালিকপক্ষকে দায়ী করেছেন বিভাগীয় কমিশনার গঠিত তদন্ত কমিটি। ভবিষ্যতে এসব ঘটনা প্রতিরোধে ২০টি সুপারিশ প্রণয়ন করা হয়েছে।
আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে ১৩ সদস্যের এ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিনের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ডিপোতে আগুনের সূত্রপাত হওয়া কন্টেইনার ভর্তি সিল্ড করা হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ছিল। এসব হাইড্রোজেন পার অক্সাইড স্মার্ট গ্রুপের মালিকানাধীন আলরাজি কেমিক্যালে এক বছর ধরে প্রস্তুত করা হয়েছিল। কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির মালিক মোস্তাফিজুর রহমান ও মুজিবুর রহমান বিএম ডিপোর ৫১ শতাংশের অংশীদার। এ ছাড়া ঘটনার পর বিএম ডিপোর নির্বাহী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জিয়াউল হায়দার, জিএম মার্কেটিং নাজমুল আকতার খান তদন্ত কমিটির শুনানিতে অংশ নেননি। তারা কোনো লিখিত বক্তব্যও দেননি। যদিও নির্বাহী পরিচালক জিয়াউল হায়দার বিএম ডিপোর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পর সিঙ্গাপুর চলে যান। জিএম মার্কেটিং নাজমুল আকতার খান পুলিশের মামলার পর পলাতক রয়েছেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান জানান, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ২৪ জন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বন্দর কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস, ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, শিপিং করপোরেশন থেকে প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, পরিবেশ ও সিআইডির ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ঘটনার সময়, আগে ও পরে কোনো সিসিটিভির ফুটেজ পাওয়া যায়নি। ডিপো পরিচালনায় ২৫টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স থাকার কথা থাকলেও এসবের অনুপস্থিতি রয়েছে বলে উঠে আসে তদন্ত প্রতিবেদনে।
এ সময় তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান, সদস্য অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবহণ পরিচালক এনামুল করিম, পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি ফারুকুল হক, সিআইডির উপকমিশনার শাহনেওয়াজ খালেদ, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনা আকতারসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৪ জুন সীতাকুণ্ডের শীতলপুর বিএমডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছে আরও দেড়শ জন। নিহতদের মধ্যে ডিপোর ১৬ জন কর্মী, ১৩ জন ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্য রয়েছেন।