ঢাকা থেকে প্রতিবেশীর গ্রামে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার কিশোরী, গ্রেপ্তার ৪
ঢাকার কেরাণীগঞ্জ থেকে বেড়াতে ঝালকাঠির নলছিটিতে আসা এক কিশোরীকে (১৬) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পরে পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার একটি গ্রাম থেকে অভিযুক্ত চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ জানায়, ঢাকার কেরাণীগঞ্জ চৌধুরীপাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকতেন নলছিটি উপজেলার লিটন হাওলাদারের স্ত্রী শাহিদা বেগম। পাশের বাসার পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের। ওই পরিবারের কিশোরীকে বেড়ানোর কথা বলে শাহিদা গ্রামে নিয়ে আসে। গত সোমবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে ওই নারীর বাসায় পোনামাছ ব্যবসায়ী মোজাফ্ফর সিকদার রাঙ্গা (৪৮), আরিফ হোসেন (৩০) ও রাসেল হাওলাদার (৩৫) কিশোরীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় স্থানীয় দুই নারী শাহিদা বেগম (৪৫) ও আছমা বেগম (৪২) সহযোগিতা করে। মেয়েটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাকে কোনো চিকিৎসা করানো হয়নি। উল্টো এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্য চাপ দেওয়া হয়।
পুলিশ আরও জানায়, নির্যাতিত ওই কিশোরী কৌশলে ঘর থেকে বের হয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দাকে বিষয়টি জানালে তাঁরা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নেয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ জনের নামে মামলা করে ওই কিশোরী। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে মোজাফ্ফর সিকদার রাঙ্গা, আরিফ হোসেন, শাহিদা বেগম ও আছমা বেগমকে গ্রেপ্তার করে। আসামি রাসেল হাওলাদার পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানায় পুলিশ। কিশোরীকে চিকিৎসার জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া মোজাফ্ফর সিকদার রাঙ্গা খুলনার দিঘলিয়া এলাকার বাসিন্দা। সে নলছিটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পোনা মাছ বিক্রি করে। অপর আসামি আরিফ হোসেনের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জের তবিরকাঠি গ্রামে। গ্রেপ্তার হওয়া দুই নারী শাহিদা ও আছমার বাড়ি নলছিটিতেই।
নির্যাতিত ওই কিশোরী বলে, ‘আমি আর মা কেরাণীগঞ্জের একটি বাসায় ভাড়া থাকি। শাহিদা বেগম আমাদের প্রতিবেশী হওয়ায় তাঁর সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক। অনেক দিন ধরেই তাদের গ্রামের বাড়িতে আমাকে নেওয়ার জন্য বলেন। আমি রাজি হলে গত সোমবার সকালে তাদের বাড়িতে যাই। সেখানে বিকেলে আমাকে তিন জন জোর করে ধর্ষণ করে। তাঁরা আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। আমার এখানে পরিচিত কেউ নেই। মাকে ফোন করেছি, আমাকে নিতে আসছেন।’
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘মেয়েটিকে যারা ধর্ষণ করেছে, তাদের দুজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। একজন পলাতক রয়েছে। আর এ কাজে সহযোগিতার অভিযোগে এবং ধর্ষণের আলামত নষ্ট করার জন্য দুই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।’