ঢাবি শিক্ষক সমিতি স্বৈরতন্ত্রের পক্ষ নিয়েছে : শামসুজ্জামান দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, এই দেশ যে জন্য স্বাধীন করা হয়েছিল, তার সবকিছু আজ পদদলিত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন একটি দলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রশাসন যেন একটি দলের প্রশাসন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সারা জীবন গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করে এসেছে। সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি স্বৈরতন্ত্রের পক্ষ নিয়েছে। আমাদের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা ও তাদের সংগঠন এই সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিবৃতি দিচ্ছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামসুজ্জামান দুদু এসব কথা বলেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার, দিগন্ত টিভি, চ্যানেল ওয়ান, ইসলামিক টিভি, দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক দিনকালসহ সকল বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেওয়ার দাবিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
দুদু বলেন, এই সরকার দেশে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করতে চাচ্ছে। দেশের জনগণকে ভয় দেখিয়ে ঘরে রাখতে চাচ্ছে। আর সাংবাদিকদেরকে ভয় দেখিয়ে তাদের লেখার বলার স্বাধীনতা কেড়ে নিতে চাচ্ছে। কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরাচারী সরকারের কাছ থেকে গণতান্ত্রিক কোনো কিছু পাব, এটা আশা করা যায় না।
অন্ধকার যুগ মনে হয় আবার ফিরে এসেছে মন্তব্য করে দুদু বলেন, গত ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে দেশে একটি শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। শুধু মতিউর রহমানের ওপর প্রথম আক্রমণ আসেনি। মাহমুদুর রহমান, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক শফিক রেহমানের ওপর আক্রমণ এসেছে। তিনি এমন আক্রমণের শিকার হয়েছেন যে এই বৃদ্ধ বয়সে দেশ ছেড়ে বিদেশে যেতে হয়েছে। তারপর আমার দেশ, দিনকাল, দিগন্ত টিভি, ইসলামী টিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যুগান্তরের সাংবাদিক মাহবুব আলম লাবলুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রম দেখলে সেই বাকশালের কথা মনে পড়ে যায়। যখন চারটি পত্রিকা রেখে সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এক নেতার এক দেশ করা হয়েছিল। সে ছাড়া আর কেউ নেতা হতে পারবে না। আর কোনো রাজনৈতিক দল থাকবে না। দেশে কোনো সংবাদ মাধ্যম থাকবে না। সেই অন্ধকার যুগ যেন আবার ফিরে এসেছে।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি আরও বলেন, এই দেশ যে জন্য স্বাধীন করা হয়েছিল সবকিছু আজ পদদলিত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন একটি দলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রশাসন যেন একটি দলের প্রশাসন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সারা জীবন গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করে এসেছে। সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি স্বৈরতন্ত্রের পক্ষ নিয়েছে। আমাদের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তাদের সংগঠন এই স্বৈরতন্ত্র সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, বিবৃতি দিচ্ছে। জাতিসংঘ থেকে বলা হয়েছে ডিজিটাল আইন বাতিল করুন। আর আমাদের গণধিকৃত সরকার ও গণধিকৃত আইনমন্ত্রী বলেছেন, এটা বাতিল করার প্রয়োজন নেই। মানুষ খেতে পাচ্ছে না। কাজ নাই চাকরি নাই। আর এই কথা মানুষ বলতে পারবে না। আর বললেও সাংবাদিকরা লিখতে পারবে না। কি ভয়ংকর ব্যাপার।
তিনি প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ যে সকল সাংবাদিক ও সম্পাদকের ওপর মামলা করা হয়েছে, সকল মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
কৃষক দলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই কর্তৃত্ববাদী সরকারকে যদি হটাতে না পারি তাহলে আগামীদিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হবে।
সংগঠনের সভাপতি সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরীসহ বাছির জামাল, রাশেদুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।