দুই গার্মেন্টসকর্মী নিহতের গুজবে ৪ বাসে অগ্নিসংযোগ, মহাসড়ক অবরোধ
গাজীপুরে বাসচাপায় গার্মেন্টসকর্মী নানি-নাতি নিহত হওয়ার গুজবে ক্ষুব্ধ লোকজন ও গার্মেন্টসকর্মীরা চারটি বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় তারা প্রায় অর্ধশত গাড়ি ভাঙচুর ও দুই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।
আজ মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ছয়দানা মালেকের বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের এসআই মনির হোসেন ও এলাকাবাসী জানায়, শেরপুরের শ্রীবর্দী থানার লঙ্গরপাড়া এলাকার মোহাম্মদ আশরাফের মেয়ে আসমা (২২) এবং তার নানি একই এলাকার মরিয়মকে (৬০) নিয়ে গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানাধীন রড মিল এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। আজ সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে আসমা তার নানিকে নিয়ে ছয়দানা হারিকেন ফ্যাক্টরি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পার হচ্ছিলেন। এ সময় চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ঢাকাগামী অনাবিল পরিবহণের একটি বাস তাদের ধাক্কা দেয়। এতে তারা গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে তায়েরুননেছা মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় এবং বাসটি আটকে রাখে।
এদিকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে আহত ওই দুজন মারা গেছেন এবং তারা গার্মেন্টসকর্মী—এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজনসহ আশপাশের বিভিন্ন কারখানার গার্মেন্টসকর্মীরা সড়কে বের হয়ে আসে। তারা প্রায় অর্ধশত গাড়ি ভাঙচুর ও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় বিক্ষুব্ধরা ওই পরিবহণের দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনার অল্প সময়ের ব্যবধানে মালেকেরবাড়ি এলাকায় বলাকা ও উজানভাটি পরিবহণের আরও দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে উত্তেজিত লোকজন। পরে আরও দুটি বাসে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে তারা।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আগুন নেভানোর জন্য ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথে বিক্ষুব্ধ লোকজন বাধা দেয়। এতে ওই মহাসড়কে যানবাহন আটকা পড়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত পৌনে ৯টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
তায়েরুননেছা মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক আশরাফ হোসেন জানান, আহতদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
জিএমপি উপকমিশনার আলমগীর হোসেন জানান, মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ঢাকাগামী দ্রুতগতির একটি বাসের চাপায় দুই পথচারী আহত হন। এ সময় আহতদের মৃত্যুর গুজবে বিক্ষুব্ধ জনতা চারটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। আগুন নিভিয়ে রাত পৌনে ৯টার দিকে বিক্ষুব্ধ জনতাকে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হলে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।