দুলাভাইয়ের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক দেখে ফেলায় মাকে হত্যা
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় গৃহবধূ ছালেমা বেগম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। জামাইয়ের সঙ্গে ছোট মেয়ের শারীরিক সম্পর্ক দেখে ফেলে মা। আর এ কারণে ছালেমা বেগমকে গলাকেটে হত্যা করে ছোট মেয়ে ও জামাতা। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারী মেয়ে ও জামাতাকে আটক করে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযুক্ত মেয়ে ও জামাতা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ বুধবার দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও গ্রামের হিরণ মিয়ার বড় মেয়ে জেসমিন আক্তারকে বিয়ে দেন মোগল মিয়ার সঙ্গে। বিয়ের কয়েক বছর পর জেসমিন আক্তার জীবিকার তাগিদে সৌদি আরব চলে যান। আর এই সুযোগে মোগল মিয়া তাঁর শালিকা শান্তি বেগমের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। একদিন তাদের শারীরিক সম্পর্ক চলাকালে নিহত ছালেমা বেগম ( মোগল মিয়ার শাশুড়ি ও শান্তি বেগমের মা) আপত্তিকর অবস্থায় তাদের দেখে ফেলেন। মেয়ে ও জামাতার মান সম্মানের কথা চিন্তা করে ছালেমা বেগম কাউকে কিছু না জানিয়ে দুজনকে সতর্ক করে দেন। কিন্তু এরপরও তাদের অবৈধ মেলামেশা চলতে থাকে।
গত ১ আগস্ট ঈদের রাতে তারা আবারও অবৈধ মেলামেশা করতে থাকে। ছালেমা বেগম তাদের দেখে চিৎকার করেন। এ সময় জামাতা মোগল মিয়া ও ছোট মেয়ে শান্তি বেগম মিলে ছালেমা বেগমের মুখ চেপে ধরে ঘরে থাকা দা দিয়ে গলাকেটে হত্যা করেন। তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করে মোগল মিয়া নিজ ঘরে গিয়ে রক্তমাখা কাপড় পরিবর্তন করে ঘুমিয়ে যান এবং শান্তি বেগম ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করতে থাকেন। এলাকাবাসী এগিয়ে এলে শান্তি জানান, তাঁর মাকে ডাকাতরা গলাকেটে হত্যা করেছে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্বামী হিরণ মিয়া বাদী হয়ে মামলা করেন। পুলিশ দুই ঘাতকসহ চারজনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ঘটনার পরপরই নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেলের এএসপি পারভেজ আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমানসহ একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘাতকদের আটক করেন। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করেন।
এমন নির্মম ঘটনায় হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও দ্রুত সময়ের মধ্যে খুনের রহস্য উদঘাটন করায় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে স্থানীয় লোকজন।