‘নগদ’ ডাক বিভাগের সেবা, বিভ্রান্তির সুযোগ নেই
দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডাক বিভাগ ও মোবাইল ব্যাংকিং ‘নগদ’-কে জড়িয়ে বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ধরনের অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন।
আজ বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘নগদ’ ডাক বিভাগের সঙ্গে রাজস্ব আয়ের অংশীদারত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবা। এটি মাত্র আড়াই বছরে দেশের প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষকে আর্থিক লেনদেনের মধ্যে এনেছে।
সিরাজ উদ্দিন বলেন, “২০১৭ সালে থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেডের সঙ্গে ডাক বিভাগের চু্ক্তি হয় এবং তার ভিত্তিতে ‘নগদ’ সেবা দিয়ে যাচ্ছে। আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, ‘নগদ’-এর মালিকানা এবং ডাক বিভাগের সঙ্গে অংশীদারত্বের বিষয়টি নিয়ে অহেতুক মানুষকে বিভ্রান্ত করার কোনো অবকাশ নেই।”
ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসারে অংশীদারত্বের জায়গা থেকে ডাক বিভাগ এবং ‘নগদ’ (থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেড) কর্তৃপক্ষ এখন মালিকানার পর্যায়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। দুপক্ষের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতেই ডাক বিভাগ ৫১ শতাংশ এবং ‘নগদ’ ৪৯ শতাংশের মালিক হচ্ছে। বিষয়টি এখন রাষ্ট্রের আইন অনুসারে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করি, কেউ এই বিষয়টি নিয়ে মনগড়া তথ্য পরিবেশন করে মানুষকে অহেতুক বিভ্রান্ত করবেন না।
“শতবর্ষী রাষ্ট্রীয় ডাক বিভাগের নবীন আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’। মাত্র আড়াই বছরে প্রতিষ্ঠানটির অভাবনীয় সাফল্য অনেকের মধ্যে ঈর্ষার জন্ম দিয়েছে। সে কারণে অনেকেই ‘নগদ’-কে নিয়ে চক্রান্ত করছেন। যার প্রমাণ হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন বিশেষভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে।”
মো. সিরাজ উদ্দিন আরও বলেন, “একমাত্র ‘নগদ’ দেশের এমএফএস বাজারের একচেটিয়াত্ব ভাঙতে সক্ষম হয়েছে। আর সে কারণে অনেকে ‘নগদ’-এর বিরুদ্ধে গুজব ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন। আমরা আশা করব, এমন হীন ও অপচেষ্টা থেকে সবাই বিরত থাকবেন। রাষ্ট্রীয় একটি সেবার সুন্দর অগ্রযাত্রার জন্য আমরা যেকোনো গুজব ও অপপ্রচার প্রতিরোধ করতে সদা প্রস্তুত রয়েছি। মনে রাখবেন, রাষ্ট্রীয় সেবার বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের গুজব ও মিথ্যা রটানো একটি রাষ্ট্রীয় গুরুতর অপরাধ।”
ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, “ট্রাস্ট কাম সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট নিয়েও অনেক গণমাধ্যমে কিছু সংবাদ এসেছে। আমি বলছি, ‘নগদ’ সব সময়ই ডাক বিভাগের অনুমোদন নিয়েই নতুন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলে। আমি মনে করি, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এই চিঠির কারণে কারো বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো অবকাশ নেই।”
বিভ্রান্ত না হয়ে গ্রাহকদের ডাক বিভাগের সেবা ‘নগদ’-এর পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ই-কামার্স প্ল্যাটফর্মের ত্রুটির কারণে কিছু অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে এবং এই তথ্যগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে। পর্যালোচনার পরে অ্যাকাউন্টগুলো খুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত সাময়িক এই দুর্ভোগের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।”
নানান ধরনের সরকারি ভাতা বিতরণকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তুলে আনার কৃতিত্ব দেখানো ‘নগদ’ এখন প্রতিদিন গড়ে ৭০০ কোটি টাকা দৈনিক লেনদেন করছে।