নিঃস্বার্থভাবে জনগণের পাশে দাঁড়ান : বিমানবাহিনীর ক্যাডেটদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ এবং শৃঙ্খলাকে সৈনিক জীবনের পাথেয় আখ্যায়িত করে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর নবীন সৈনিকদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ব্রতী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ থেকে আপনাদের ওপর ন্যস্ত হচ্ছে দেশমাতৃকার মহান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে আপনাদের সজাগ ও সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে যশোরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমিতে ‘৭৬তম বাফা কোর্স’ এবং ‘ডিই-২০১৮’ কোর্স সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত ‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০১৯’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। বার্তা সংস্থা বাসস ও ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।
১০৪ জন অফিসার ক্যাডেট এদিন কমিশন লাভ করেন। প্রধানমন্ত্রী দেশমাতৃকার প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার জন্য বিমানবাহিনীর নবীন কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আপনারা শপথ গ্রহণ করেছেন। কাজেই এটা হবে আপনাদের জীবনের সবচেয়ে থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রধান ও প্রথম ব্রত।’
‘নিঃস্বার্থভাবে জনগণের পাশে থাকবেন এবং দেশের সেবা করবেন, এটাই সকলের প্রত্যাশা’, যোগ করেন তিনি।
উন্নত চরিত্র এবং মানসিক শক্তি একজন বিমান সৈনিককে আদর্শ সৈনিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়ক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আদেশ মেনে চলবেন, চেইন অব কমান্ড বজায় রাখবেন, অধস্তনদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবেন। তাহলেই বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।’
শেখ হাসিনা এ সময় ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ‘পাসিং আউট’ ক্যাডেটদের উদ্দেশে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেই বক্তব্যের কিছু অংশের উদ্ধৃত করে তাঁদের দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সকলকে সজাগ করেন।
জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘“আমি তোমাদের জাতির পিতা হিসেবে আদেশ দিচ্ছি, তোমরা সৎপথে থেকো, মাতৃভূমিকে ভালো বাইসো। ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াবা, গুরুজনকে মেনো, সৎপথে থেকো, শৃঙ্খলা রেখো, তা হলে জীবনে মানুষ হতে পারবা।’”
জাতির পিতার এ নির্দেশনা তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালনের জন্যও নবীন কর্মকর্তাদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি আশা করব, এ কথা আপনারা সব সময় স্মরণ রাখবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সততা, একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে বিমানবাহিনীর ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, অকৃত্রিম দেশপ্রেমের প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে এবং সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে বাংলার আকাশ মুক্ত রাখার যে শপথ আজ আপনারা নিলেন, তার বাস্তবায়ন আপনারা সব সময় করে যাবেন।’
‘নবপ্রজন্মের উদীয়মান কর্মকর্তা হিসেবে আজকের বিমানবাহিনীকে আপনারা নিয়ে যাবেন সফলতার শিখরে—এই আমার প্রত্যাশা’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।