নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে : নজরুল ইসলাম খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘বলা হচ্ছে দেশে গণতন্ত্র রয়েছে, কিন্তু গণতন্ত্র চর্চা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় ব্যবস্থা কায়েম করেছে, তারাই এখন গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন দাবি করে। তখন কষ্ট হয়। গণতন্ত্রতো ক্ষমতায় যাবার বাহন না। গণতন্ত্রের বাহন হলো নির্বাচন। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। আপনারা (সরকার) সেই নির্বাচন ধ্বংস করে বলবেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন এটা বলতে পারেন না।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আজ সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন। সম্মেলনে শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরীকে সভাপতি ও নজরুল ইসলামকে মহাসচিব ঘোষণা করা হয়।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করলে আন্দোলনে জয়ী হওয়া যায় না। ক্ষমতায় যাওয়া যায় না। তারা (আওয়ামী লীগ) জানে এটা। জানার পরেও তারা একই ভুল করছে। ক্ষমতা কি মানুষকে এতই অন্ধ করে।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধে ছিলাম, আক্ষেপটা বোধহয় তাদেরই বেশি। কি ভেবে, কি চিন্তা করে, কি আশা নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলাম। আর কি পেয়েছি। কত রঙ, কত রকমের কথা শুনেছিলাম আমরা, বাংলাদেশ সোনার বাংলা হবে। বাংলাদেশকে কত কি করা হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ করা হবে। এখন স্মার্ট বাংলাদেশ করা হবে শুনেছি। সে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখেছি, অনাচার দেখেছি, অব্যবস্থাপনা দেখেছি। শেষ পর্যন্ত সেদেশে গণতন্ত্রহীনতা দেখেছি, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা দেখেছি। এগুলোর কোনোটা সোনার মতো মূল্যবান না।’
আজকে বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমাদের এত নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাত্র তিন মাসের মধ্যে আমাদের ১২-১৩ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তারপরও আমাদের প্রতিটা প্রোগ্রাম সফল হয়েছে। প্রতিটা আন্দোলনে সাধারণ জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে। আর সাধারণ জনগণ তখনি অংশগ্রহণ করে যখন তারা পরিবর্তন চায়। পরিবর্তন চায় কল্যাণের জন্য, সমৃদ্ধির জন্য, শান্তির জন্য। জনগণের শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধির যে আকাঙ্ক্ষা যুগে যুগে কেউ কখনো দাবিয়ে রাখতে পারেনি। এই সরকারও পারবে না। আগামী দিনের সেই লড়াইয়ে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী। এসময় বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ইবরাহীম, গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এলডিপির একাংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এহসানুল হুদা, এনডিপির চেয়ারম্যান কারি আবু তাহের, জাগপার জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহিউদ্দিন একরাম, ইসলামি ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, মুসলিম লীগের মহাসচিব মো. নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ শাহ আলম, মুক্তার আহমেদ প্রমুখ।