পাঁচ দিনের সফরে আজ আরব আমিরাত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আজ সোমবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইউএই’র ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক মুহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের আমন্ত্রণে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সফরে যাচ্ছেন। আগামী ১২ মার্চ তাঁর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকাল রোববার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরের বিস্তারিত কার্যসূচি তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র। দুবাই, আবুধাবি, রাস আল খাইমরা ও শারজা সংযুক্ত আমিরাতের গুরুত্বপূর্ণ শহর। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে ও বাংলাদেশের শ্রমবাজার অক্ষুণ্ন রাখতে ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুসংহত করে বিনিয়োগের নতুন কেন্দ্র তৈরি করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতির মাতা শেখা ফাতিমার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎ করবেন। এটি একটি দুর্লভ সুযোগ। এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পর্ক আরও মজবুত করতে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করা হবে, যা আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য খুবই লাভজনক হবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দুবাই শাসকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে দুবাই এক্সপোতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সফরকালে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ঘাটতি মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি বাড়াতে বাংলাদেশ ইউএই’র সঙ্গে ‘সরাসরি শিপিং’ লাইন চালু করার ওপর জোর দেবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি বিশ্বখ্যাত বন্দর ব্যবস্থাপনা কোম্পানিকে নতুন পতেঙ্গা বন্দরের পাশে পরিকল্পিত বে টার্মিনালগুলোর মধ্যে একটি নির্মাণ করতে দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া দ্বিপক্ষীক আলোচনাকালে বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপারে আলোচনা করবে।’
এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘ঢাকা অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে আইসিটি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রগুলোতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সহযোগিতার এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে আগ্রহী, যা বাংলাদেশের সক্ষমতাকে সম্মৃদ্ধ করে আসন্ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে সক্ষম করে তুলবে। পাশাপাশি, দুই দেশের ব্যবসায়ী কোম্পানিগুলোর মধ্যে এক যৌথ ব্যবসা ফোরাম গঠিত হবে।’
ড. মোমেন বলেন, ‘আমি আশা করছি, এটা আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য খাতের জন্য অনেক লাভজনক হবে। এটা বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্রও তৈরি করতে পারে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুবাই এক্সপোতে বাংলাদেশি প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করবেন, যেখানে গত বছর থেকে বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক অঙ্গণে দেশের অসামান্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তুলে ধরছে। এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস আল খাইমায় বাংলাদেশি কমিউনিটি পরিচালিত ‘বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল’-এর একটি নতুন ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।’
ইউএই-কে দ্বিতীয় বৃহত্তম রেমিটেন্স আয়ের দেশ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশিদের জন্য পুনরায় শ্রম বাজার উন্মুক্ত করেছে। এটা বাংলাদেশের কূটনৈতিক বিজয়।’ তিনি আশা করেন, এই উচ্চ-পর্যায়ের সফরটি বাংলাদেশের জনশক্তির জন্য অধিকতর সুযোগ সৃষ্টি করবে।