পেশিশক্তিতে নির্বাচিত হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে না : ইসি আলমগীর
পেশিশক্তি ব্যবহার করে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। আজ মঙ্গলবার দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
এর আগে সকালে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে নোয়াখালীর হাতিয়ার দুই ইউনিয়নের ৩৫ জন ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা ইসি ভবনের সামনে কাফনের কাপড় ও বিষের বোতল নিয়ে অবস্থান নেন।
মো. আলমগীর বলেন, ‘পেশিশক্তি ব্যবহার করে কেউ যদি নির্বাচিত হবার স্বপ্নে দেখে, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না। নির্বাচনী দায়িত্বপালনের প্রশাসনের কারও অবহেলা পাওয়া যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে যদি অন্য প্রার্থীর বাধা দেওয়ার অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে তার প্রার্থীতা বাতিল করা হবে।’
ইসি আলমগীর বলেন, ‘পেশিশক্তি ব্যবহার করে বিজয়ী হব, জনগণের সেবা করব—এটা যদি কেউ মনে করে থাকেন, তাহলে অত্যন্ত ভুল করছেন এবং এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না।’
প্রার্থীদের নির্বাচন ভবনের সামনে অবস্থানের বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে ইসি আলমগীর বলেন, ‘এটা আপনাদের (সাংবাদিকদের) কাছে প্রথম শুনলাম। কর্মকর্তাও বলল। আমরা তাদের বলেছি, উনাদের যদি কেউ থাকে, তাহলে তাকে আমার কাছে নিয়ে আসেন।’
ভোটে যদি কেউ বাধা দেয় তাহলে ইসির ভূমিকা কী হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ‘বাধা দিয়ে কোনো লাভ হবে না। যেকোন উৎস থেকে যদি তথ্য পাই যে, প্রার্থীদের বাধা দেওয়া হয়েছে, ভোটারকে বাধা দেওয়া হয়েছে অথবা নমিনেশন পেপার সাবমিট করতে বাধা দেওয়া হয়েছে, তাহলে প্রথমে আমরা যেটা করি, শিডিউলটাকে স্থগিত করে দিই, যাতে অন্য প্রার্থীরা নমিনেশন জমা দিতে পারে। যদি এমন হয় ওইখানে প্রার্থী নিরাপদ নয়, তাহলে পার্শ্ববর্তী জেলা বা উপজেলায় তাদের নমিনেশন সাবমিট করার সুযোগ দিই।’
মো. আলমগীর আরও বলেন, ‘প্রার্থী ও ভোটারদের নিরাপত্তা, প্রচারের সুযোগ করে দেওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। দায়িত্ব পালনে কারও অবহেলা পেলে, তাঁর বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা মনে করি, এইগুলা করে কোন লাভ হবে না। যারা বুদ্ধিমান ও সচেতন তারা এইগুলো করবে না বলে আমরা মনে করি।’
জানা গেছে, হাতিয়ার দুই ইউপি প্রার্থীদের দাবি ছিল, সেখানকার প্রশাসনকে জানিয়ে কোন লাভ হয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ওই এলাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সার্কেল এসপিকে প্রত্যাহারসহ সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
হাতিয়া প্রসঙ্গে মো. আলমগীর বলেছেন, ‘প্রত্যাহার তো সমাধান না। এখানে কার দায়িত্বহীনতা আছে, সেটা আমরা দেখব। একটা জিনিস বুঝতে হবে, প্রশাসনে যারা থাকে, তাদের সংখ্যা খুবই অল্প। এটা যদি প্রশাসনের নাকের ডগায় হয়, তাহলে এক জিনিস, আর যদি হয় দূরে, প্রেজেন্সে হয় নাই...কারণ প্রশাসন তো সবার বাড়ি বাড়ি থাকতে পারবে না। যদি দেখা যায় ঘটনা অনেক দূরে হইছে, প্রশাসনে বাইরে বা সম্মুখে না। অথবা, এমন একটা সময় ঘটনা হইছে, যেখানে প্রশাসন দূরে ছিল। তখন তো আর প্রশাসনের করার কিছুই থাকছে না। সামনে কিছু ঘটলেও প্রশাসন সেখানে যদি নিশ্চুপ থাকে, তাহলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেব।’
মো. আলমগীর আরও বলেন, ‘ভোটে কেউ বাধা দিলে দেশের প্রচলিত আইনে মামলা হবে। আপনারা দেখবেন তার প্রশাসন তার বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে কি না। কেউ যদি পেশিশক্তি প্রয়োগ করে, তাহলে ইসি তার ক্ষমতাবলে মামলা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া ও ভোট বাতিল করে দেওয়া বা প্রার্থীর (অভিযুক্ত) প্রার্থীতা বাতিল করতে পারে।’