ফ্যানে ঝুলন্ত স্বামী, বিছানায় স্ত্রীর গলাকাটা লাশ
রাজধানীর ডেমরা এলাকার মধুবাগের একটি বাসা থেকে লিয়াকত আলী (৫৫) নামের এক ব্যক্তি এবং তাঁর স্ত্রী সীমা সুলতানার (৪৫) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে লাশ দুটি উদ্ধার করে ডেমরা থানা পুলিশ।
আজ বুধবার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘আমাদের ধারণা, প্রথমে লিয়াকত আলী তাঁর স্ত্রী সুলতানার গলা কেটে নিজেও আত্মহত্যা করেছেন।’
মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘গতকাল বিকেল ৪টার দিকে আমরা খবর পাই। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, রুমের ভেতর থেকে ছিটকিনি লাগানো। ওই ভবনের অনেকেই বাসার সামনে ভিড় করে। পরে আমি সেখানকার লোকজন নিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকি। ঢুকে দেখি, সুলতানার গলা কাটা। খাটের ওপর শোয়া অবস্থায় ছিল তাঁর মরদেহ। আর, ওই ঘরের ভেতরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে লিয়াকত আলীর মরদেহ।’
লাশ উদ্ধার করে দম্পতির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) মর্গে পাঠানো হয় বলে জানান মোজাম্মেল হক।
জানা গেছে, সীমা সুলতানা বাবার বাড়ি মাগুরা জেলায়। আর, লিয়াকত আলীর গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারি উপজেলায়। ওই দম্পতির দুই ছেলে-মেয়ে। মেয়ে লিমা বিবাহিত, থাকেন স্বামীর বাসায়। ছেলে লিমন কলেজ পড়ুয়া। লিয়াকত আলীর একটি ওষুধের ফামের্সি রয়েছে।
গত দুই সপ্তাহ আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ শুরু হলে তাঁদের ছেলে লিমন মাকে নানার বাড়ি রেখে আসে। পরবর্তীকালে পরিবেশ ঠান্ডা হলে পুনরায় সীমাকে ডেমরার বাসায় আনা হয় বলে দাবি করেছেন মোজাম্মেল হক।
নিহতের ছেলের লিমনের বরাত দিয়ে মোজাম্মেল হক জানান, ঘটনার আগের রাত থেকে তার বাবা-মায়ের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। মঙ্গলবার সকালে লিমন কলেজে যান। বিকালে ফিরে মাকে খাবারের জন্য ডাকতে থাকে। কিন্তু, মায়ের কোনো সাড়া না পেলে সন্দেহ হয় লিমনের। তারপর লিমন ঘরের ভেন্টিলেটর ভেঙে দেখেন, ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে তাঁর বাবা। এরপর বাড়ির মালিককে তিনি খবর দেন। পরে পুলিশ যাই সেখানে।
ওই কক্ষের মধ্যে প্রবেশ করে পুলিশ একটি ছুরি ও বটি উদ্ধার করেছে। তবে, মোজাম্মেলের দাবি—‘ওই ছুরি বা বটিতে কোনো রক্তের দাগ ছিল না। এ ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি হত্যা, আরেটি অপমৃত্যু মামলা। আমরা বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করছি। এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’