ভৈরবে অচল ইউনিয়ন কৃষি আবহাওয়া তথ্যবোর্ড ও রেইনগজ মিটার
সরা দেশের মতো কিশোরগঞ্জ ভৈরবের সাতটি ইউনিয়নে স্থাপন করা হয়েছিল কৃষি আবহাওয়া তথ্যবোর্ড ও রেইজগজ মিটার। বোর্ডে রয়েছে আগে ও পরের তিন দিনের কৃষিভিত্তিক আবহাওয়ার হালনাগাদ তথ্যের নানা ছক। আর ভবনের ছাদে বসানো হয়েছে রেইনগজ মিটার ও সৌরবিদ্যুতের প্যানেল। কিন্তু এখন সেগুলো অচল হয়ে পড়ে আছে।
জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিজ নিজ ইউনিয়নে স্থাপিত এইসব তথ্যবোর্ড প্রতি তিন দিন পর হালনাগাদ করার কথা, যাতে কৃষকরা আবহাওয়ার তথ্য সঠিকভাবে পায়। কিন্তু স্থাপনের পর থেকে নিয়মিত তথ্য হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা না করায় এবং রেইনগজ মিটারগুলো ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ না করায় সেগুলো অকেজো হয়ে আছে। এ ছাড়া রেইনগজ ব্যবহারের বিষয়ে কৃষকদের যথাযথ অবহিত না করায় আছে অভিযোগ।
উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের কৃষক এরশাদ মিয়া ও রবিউল ইসলাম এবং শিমুলকান্দি ইউনিয়নের পাঁচঘরহাটি গ্রামের মো. নাছির উদ্দিন কৃষকদের অবহিতকরণে উদ্যোগ না থাকার কথা জানান।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশজুড়ে ‘কৃষি আবহাওয়া তথ্যপদ্ধতি উন্নতিকরণ’ শীর্ষক এই প্রকল্পটি হাতে নেয়। এর অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় চার হাজার ৫১টি ইউপিতে স্বয়ংক্রিয় রেইনগজ মিটার ও কৃষি আবহাওয়া তথ্যবোর্ড স্থাপন ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের আবহাওয়াবিষয়ক তথ্য পাঠানোর জন্য ইন্টারনেট সংযোগসহ ছয় হাজার ৬৬৪টি ট্যাব সরবরাহ করা হয়। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিল ১১৯ কোটি টাকা।
প্রকল্পটির প্রথম পর্যায় শেষ হয় ২০২১ সালের জুন মাসে। প্রকল্পের কার্যক্রমের মাধ্যমে কৃষকরা বৃষ্টির পরিমাণ, তাপমাত্রা, আদ্রতা, বায়ুপ্রবাহ, ঝড়ের পূর্বাভাস, আলোকঘণ্টাসহ ১০টি বিষয়ে তথ্য জানার কথা।
এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মাঠপর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়।
উপজেলা কৃষি বিভাগ আরও জানায়, এই উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে সাদেকপুর, কালিকাপ্রসাদ, গজারিয়া, আগানগর, শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে আবহাওয়া তথ্যবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। বাকি দুটি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন না থাকায় অন্যত্র স্থাপন করা হয়েছে।
এই বিষয়ে শিমূলকান্দি ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দিন জানান, প্রায় তিন বছর আগে তাঁর কার্যালয়ে একটি তথ্যবোর্ড টানিয়ে যায় কৃষি বিভাগের লোকজন। পরে আর কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। কখনও কোনো কৃষককে এই বোর্ড থেকে তথ্য নিতে দেখেননি।
উপজেলার শ্রীনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো.হারুন অর রশিদ ভূঁইয়া জানান, কৃষি বিভাগের আবহাওয়া তথ্যবোর্ডগুলো অচল থাকায় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা। দ্রুত সেগুলো সচল করতে বিভাগের প্রতি আহ্বান করা হচ্ছে।
ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, ‘উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে আবহাওয়া তথ্যবোর্ড ও রেইনগজ মিটার রয়েছে। বর্তমানে কয়েকটির যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক ত্রুটির জন্য কার্যক্রম বন্ধ আছে।’