‘মাইল্ড স্ট্রোক’ হয়েছে ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের ‘মাইল্ড স্ট্রোক’ হয়েছে। এতে করে তাঁর ডান হাত কাজ করছে না। এ ছাড়া বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁর শারীরিক দুর্বলতা ও রক্তশূন্যতা রয়েছে। ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বর্তমানে রাজধানীর মগবাজারে আদ্-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আদ্-দ্বীন হাসপাতালের মহাপরিচালক ডা. নাহিদ ইয়াসমীন আজ রোববার দুপুরে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের বাসা থেকে টেলিফোন করলে আদ্-দ্বীন হাসপাতালের একজন ডাক্তার ও নার্স তাঁর বাসায় যান। সেখানে গিয়ে ডা. রিচমন্ড রোল্যান্ড গোমেজ তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির জন্য পরামর্শ দেন। পরে আদ্-দ্বীন হাসপাতালে নেওয়ার পর দেখা যায়, ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের ডান হাত কিছুটা দুর্বল। পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাঁর মাইল্ড স্ট্রোক হয়েছে।’
ডা. নাহিদ ইয়াসমীন আরো বলেন, ‘ব্যারিস্টার রফিক-উল হক অনেক দিন খাওয়া-দাওয়া ঠিকমতো করছেন না। এ কারণে তাঁর শরীর দুর্বল। এ ছাড়া তাঁর রক্তশূন্যতা রয়েছে। তিনি এখনো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ মুহূর্তে তিনি কথাবার্তা বলছেন। সারাক্ষণ ডাক্তাররা তাঁর দেখাশোনা করছেন। সবাই স্যারের জন্য দোয়া করবেন। তিনি যেন দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে পারেন।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে খ্যাতিমান প্রবীণ এই আইনজীবীকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে ভিআইপি কেবিনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তিনি হাসপাতালের ডা. রিচমন্ড রোল্যান্ড গোমেজের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।
ওই সময় চিকিৎসকের বরাত দিয়ে হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, বার্ধক্যজনিত, ইউরিন ইনফেকশন ও রক্তশূন্যতার কারণে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক শারীরিকভাবে দুর্বল। তাঁকে তরল খাবার দেওয়া হচ্ছে।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের বাঁ পায়ে অস্ত্রোপচার হয়। এর পর থেকে তাঁর স্বাভাবিক হাঁটাচলা ব্যাহত হয়। মাঝেমধ্যে পায়ে ব্যথা হয়। যে কারণে হুইলচেয়ারে যাওয়া-আসা করতে হয়।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ২০১১ সালে স্ত্রী ডা. ফরিদা হকের মৃত্যুর পর থেকে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন।
রফিক-উল হকের জুনিয়র এক আইনজীবী বলেন, ‘অনেক দিন স্যার লোকসমাগম ও গণমাধ্যম এড়িয়ে চলেন। কারো সঙ্গে বেশি সময় কথা বলেন না। সংবিধান, আইন, আদালত, দেশের রাজনীতির প্রতি এখন আর আগের মতো আগ্রহ নেই। আগে যেভাবে এসব নিয়ে সরব ছিলেন, এখন তা একেবারেই নেই। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া আদালতেও আসেন না খুব একটা। আদালত-সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়েও এখন তাঁর আগের মতো উৎসাহ নেই। স্যারের মামলাগুলো এখন আমরাই পরিচালনা করি। তিনি আমাদের পরামর্শ দেন। আর পুরানা পল্টনের ছায়াশীতল, নিরিবিলি এই বাড়িটি তাঁর এত প্রিয় যে এখান থেকে কোথাও যেতে চান না তিনি।’