মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি পূর্ণাঙ্গ করছে ছাত্রদল
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2022/03/19/jcd.jpg)
দীর্ঘ ২৭ বছর পর নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করে বিএনপি’র ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
সারা দেশের কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে দুবছরের জন্য ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হলেও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরেও নতুন কমিটির দেখা মেলেনি। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিকে এবার পূর্ণাঙ্গ করার জন্য কাজ করছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর পরেই দলের নেতৃত্বে আসেন বিএনপি’র বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দলকে ঢেলে সাজাতে কাজ শুরু করেন। কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করেন বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব। কিন্তু, নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল। ষাট সদস্যের আংশিক পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পার হয়ে যায় বর্তমান কমিটির মেয়াদ।
মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় ছয় মাস পর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির পূর্ণাঙ্গ করার কাজে হাত দিয়েছে নেতারা। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলকে ১৭১ সদস্য বিশিষ্ট ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটি করার কথা বললেও তাঁরা ২০১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি করার বিষয়ে রাজি করান তাঁকে।
গত মঙ্গলবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ছাত্রদলের বর্ধিত সভায় কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গকরণ বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বলেন যাতে করে টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে অন্য কোনো পন্থা অবলম্বন করে কেউ কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদায়ন না হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখার জন্য।
বর্ধিত সভায় ছাত্রদলের একাধিক সহ-সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সহ-সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বলেন যারা বিগত দিনে ছাত্রদলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছে এবং বিভিন্ন সময়ে মামলা হামলার শিকার হয়েছে, তাদের যেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদায়ন করা হয়।
নাম প্রকাশ না করে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের এক সহ-সভাপতি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি ১৭১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি করার কথা বললেও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ২০১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি করার বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে রাজি করিয়েছেন।
ওই সহ-সভাপতি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার আমাদের বর্ধিত সভা হয়েছে, সেখানে কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গকরণ-এর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি—যারা বিগত দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে ছিল তাদের যেন মূল্যায়ন করা হয়। অর্থের বিনিময়ে বা অবৈধ কোনো পন্থা অবলম্বন করে যাতে কেউ কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ না পায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য বলেছি।’
ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, ‘আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির পূর্ণাঙ্গ করার বিষয়ে একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। কত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে. সেটি নির্ধারণ করে দেননি। তিনি বলেছেন, কমিটির আকার ছোট হয়। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ২০১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার বিষয়ে মত দিয়েছেন। বর্ধিত সভায়ও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
সাইফ মাহমুদ জুয়েল আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হলে অবশ্যই যারা দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছে, যারা আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে ছিল, তাদের মূল্যায়ন করা হবে।’