মোংলায় ডুবেছে কয়লাবোঝাই বাল্কহেড, নিখোঁজ পাঁচ
মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়া এলাকায় কয়লাবোঝাই একটি বাল্কহেড ডুবে গেছে। চ্যানেলটির হাড়বাড়িয়ার ৯ নম্বর অ্যাংকোরে থাকা একটি বিদেশি জাহাজ থেকে কয়লাবোঝাই করে ছেড়ে আসার পর সেলিং হওয়া অপর একটি বিদেশি জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বাল্কহেডটি ডুবে যায়।
তবে, এ ঘটনায় রাতেই বাল্কহেডের দুই স্টাফকে উদ্ধার করা গেলেও এখনও নিখোঁজ রয়েছেন পাঁচজন। তাদের সন্ধানে সেখানে উদ্ধার তৎপরতার কাজ করছে কোস্ট গার্ড।
দুর্ঘটনাকবলিত এলাকায় বিদেশি জাহাজ এমভি এলিনাবিতে থাকা টি হক কোম্পানির সুপারভাইজার মো. লোকমান বলেন, ‘বাল্কহেডটি ডুবে যাওয়ার সময় দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। কোস্ট গার্ড তাদের নিয়ে গেছে। শুনেছি বাল্কহেডে পাঁচ থেকে ছয়জন স্টাফ ছিলেন। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে তিনজন নিখোঁজের কথা।’
কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উদ্ধার হওয়া দুই স্টাফের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাল্কহেডটিতে সাতজন লোক ছিলেন। তাই বাকি পাঁচজনই নিখোঁজ বলে তারা কোস্ট গার্ডকে জানিয়েছেন।
কয়লা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিনিধি মো. আশিকুর রহমান জানান, বন্দরের হাড়বাড়িয়া এলাকার ৯ নম্বর অ্যাংকোরে অবস্থানরত বিদেশি জাহাজ এমভি এলিনাবি থেকে গতকাল সোমবার রাতে ৬০০ থেকে সাড়ে ৬০০ মেট্রিক টন কয়লা বোঝাই করে বাল্কহেড এমভি ফারদিন। কয়লা বোঝাই শেষে ওই বিদেশি জাহাজ ছেড়ে প্রায় ৭০০ গজ দূরে যেতেই রাত ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে সেলিং হওয়া অপর একটি বিদেশি জাহাজের সঙ্গে বাল্কহেডটির ধাক্কা লাগে। ওই সময়ে ব্যাক গিয়ারে থাকার কারণেই মূলত বিদেশি জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফলে বাল্কহেডটি মুহূর্তের মধ্যেই সেখানে ডুবে যায়। বাল্কহেডটিতে দুজন নিরাপত্তাকর্মী ও পাঁচজন নিজস্ব স্টাফ ছিলেন। রাতে দুজন জীবিত উদ্ধার হয়েছেন, আর এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন পাঁচজন।
মো. আশিকুর আরও জানান, কয়লা নিয়ে ঢাকার মিরপুরের গাবতলীতে যাওয়ার কথা ছিল বাল্কহেডটির। বাল্কহেডটি হাড়বাড়িয়ার ৮ ও ৯ নম্বর অ্যাংকোরেজের মাঝামাঝি এলাকায় ডুবেছে বলেও জানান তিনি।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দিন বলেন, ‘শুনেছি ওই বাল্কহেডে তিনজন স্টাফ নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের সন্ধানে কোস্ট গার্ড কাজ করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে যে বাল্কহেডটি ডুবেছে, সেটি সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে পণ্য পরিবহণ করছিল। কারণ, এক হ্যাজ বিশিষ্ট বাল্কহেড ডিজি শিপিং থেকে নিষিদ্ধ। এ বাল্কহেড বালু ছাড়া অন্য কোনো পণ্য পরিবহণ করতে পারবে না। এটির বিরুদ্ধে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। বাল্কহেডটির চলাচলে নিজস্ব কোনো যোগাযোগ (যান্ত্রিক বার্তা আদান-প্রদাণ) ব্যবস্থা নেই। ফলে বাল্কহেডটি জানেও না যে ওই সময়ে মার্চেন্ট শিপ মুভমেন্ট হচ্ছিল, তাই দুটি বিদেশি জাহাজ সেলিং হয়ে যাওয়ার সময় একটির পেছনের অংশে ধাক্কা খেয়ে সেটি ডুবে যায়।’
শেখ ফখরউদ্দিন আরও বলেন, ‘বাল্কহেডটি মূল চ্যানেলের বাইরে পূর্ব পাশে ডুবেছে। এতে জাহাজ চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না।’
এর আগে গত ৮ অক্টোবর সার নিয়ে বন্দরের পশুর নদীতে এবং ৯ অক্টোবর পাথর নিয়ে ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় দুটি কার্গো জাহাজ ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।