রাষ্ট্রপতির কাছে তুরস্ক ও ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূতদের পরিচয়পত্র পেশ
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্ক ও ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূতদের কাছ থেকে পরিচয়পত্র গ্রহণ করেছেন এবং তাঁদের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। রাষ্ট্রদূতরা হলেন—তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের রামিস সেন এবং ফিলিপাইন প্রজাতন্ত্রের লিও টিটো এল. আউসান জেআর।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন গণমাধ্যমকে জানান, তাঁদের পরিচয়পত্র গ্রহণ করে রাষ্ট্রপতি দুই দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রশংসা করেন। বিশেষ করে, পারস্পরিক সুবিধার্থে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে দূত হিসেবে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। এখানে তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের সময় দেশ দুটির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত হবে বলেও রাষ্ট্রপ্রধান আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তুরস্কের রাষ্ট্রদূত তাঁর পরিচয়পত্র দাখিলের পরপরই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন।
এরপর, রাষ্ট্রপতি তুরস্কের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করে আবারও সেদেশের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আগামী দিনে অত্যন্ত বিশ্বস্ত ও পুরনো বন্ধু হিসেবে সব আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তুরস্কের সরকার ও জনগণের পাশে থাকবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমর্থনের জন্য রাষ্ট্রপ্রধান তুরস্কের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।’
পরে রাষ্ট্রপতি ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় উল্লেখ করেন, ফিলিপাইন সরকার ও জনগণ ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে আন্তরিক সমর্থন দিয়েছিল। পরে মুক্তিযুদ্ধের পর, বাংলাদেশকে প্রাথমিক পর্যায়ে স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে এটি ছিল অন্যতম। দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে চমৎকার উল্লেখ করে আবদুল হামিদ ফিলিপাইন সরকারকে ওষুধ, কৃষি পণ্য, হালকা প্রকৌশল ও পাটজাত পণ্যসহ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো অন্বেষণ করার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘দুই পক্ষ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা খাতেও সহযোগিতা অন্বেষণ করতে পারে।’ রাষ্ট্রপতি হামিদ আসিয়ান সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনারশিপের জন্য বাংলাদেশের আবেদনকে সমর্থন করার জন্য ফিলিপাইন সরকারকে অনুরোধ জানান। তিনি দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে বাংলাদেশে তাঁদের দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রদূতদের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
রাষ্ট্রদূতরা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতিকে বলেন, ‘আমাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের সময় বাংলাদেশ সরকারকে সম্ভাব্য সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবো।’
এ সময়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিব ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, বঙ্গভবনে পৌঁছালে অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) একটি অশ্বারোহী দল রাষ্ট্রদূতদের গার্ড অব অনার প্রদান করে। রাষ্ট্রদূতরা গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন। এসময়ে সেনাবাহিনীর বাদ্যযন্ত্রের সাহায্যে সংশ্লিষ্ট দেশের জাতীয় সঙ্গীতও বাজানো হয়।