রোববার থেকে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ ধর্মঘট
বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৭ জন নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার বাসচালকের মুক্তির দাবিতে আগামী রোববার থেকে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, মাইক্রোবাস ও থ্রি-হুইলার পর্যন্ত এ ধর্মঘটের আওতায় থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটি এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। রাজশাহীতে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহতাব হোসেন চৌধুরী দুই বিভাগের পক্ষ থেকে ধর্মঘটের ঘোষণা দেন।
মাহতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘গত বছরের ২৬ মার্চ রাজশাহীর কাটাখালীতে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহণের যাত্রীবাহী বাস ও রংপুরের পীরগঞ্জ থেকে আসা একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসে আগুন ধরে গেলে চালকসহ ১৮ যাত্রীর ১৭ জনই মারা যায়। প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময় মহাসড়ক দিয়ে বাঁশ নিয়ে যাওয়া ভ্যান ও মাইক্রোবাসের বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছিল। এরপরও এক বছর ধরে হানিফ পরিবহণের চালক আব্দুর রহিমকে জামিন না দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। এর আগে গত ১৫ মার্চ বাসচালকের জামিনের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে ২৪ মার্চের মধ্যে জামিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বৃহস্পতিবারও রাজশাহীর আদালত বাসচালক আব্দুর রহিমের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। এ কারণে দুই বিভাগের শ্রমিক নেতারা সর্বসম্মতিক্রমে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে রাজশাহী জেলা ট্রাক ও ট্যাংক লরি এবং কাভার্ডভ্যান সমিতির সহ-সভাপতি হারুন-অর-রশীদ, শ্রমিক ইউনিয়নের মাইক্রোবাস শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. বাপ্পী, জেলা মিশুক ও সিএনজি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিদারুল ইসলাম ভুলু উপস্থিত ছিলেন।
এক বছর আগের ওই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সবাই রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসে আগুন ধরে গেলে ১৮ যাত্রীর মধ্যে চালকসহ ১৭ জনই পুড়ে গিয়েছিলেন। এ ঘটনায় কাটাখালী থানায় সড়ক পরিবহণ আইনে মামলা হয়। নিহত ব্যক্তিরা আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ায় তাদের পরিচয় নিশ্চিত হতে ডিএনএ টেস্টের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে রিপোর্ট এখনও হাতে পায়নি পুলিশ। তাই, এখন পর্যন্ত মামলার অভিযোগপত্রও দাখিল করতে পারেনি পুলিশ।