সংগীতশিল্পী আসিফের বিচার শুরুর নির্দেশ
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে করা মামলায় সংগীতশিল্পী আসিফ আকবরের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন আজ বুধবার এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম শামীম এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
আইনজীবী নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, বিচারক অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ২৩ জুন পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।
২০১৮ সালের ৪ জুন করা মামলার এজাহারে গীতিকার ও সংগীতশিল্পী শফিক তুহিন অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালের ১ জুন রাত ৯টার দিকে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ‘সার্চলাইট’ নামের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসিফ আকবর অনুমতি ছাড়াই তাঁর সংগীতকর্মসহ অন্যান্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীর ৬১৭টি গান সবার অজান্তে বিক্রি করেন।
এরপর ৫ জুন দিবাগত রাত দেড়টার দিকে শিল্পী ও সুরকার শফিক তুহিনের করা মামলায় আসিফ আকবরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। তাঁর বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলাটি করা হয়। মামলায় আসিফ আকবর ছাড়া আরও চার-পাঁচ জন অজ্ঞাত আসামি রয়েছে।
এরপর ৬ জুন আসিফ আকবরকে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম কেশব রায় চৌধুরীর আদালতে হাজির করা হয়। তখন পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে।
অন্যদিকে, রিমান্ড বাতিল চেয়ে শিল্পীর জামিন আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী।
শুনানি শেষে আদালত আসিফ আকবরকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নামঞ্জুর করে দেন। পরে জামিন নামঞ্জুর করে আসিফকে কারাগারে পাঠান আদালত।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আসিফ আকবর আর্ব এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে গানগুলো ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে ট্রু-টিউন, ওয়াপ-২, রিংটোন, পিআরবিটি, ফুলট্রেক, ওয়াল পেপার, অ্যানিমেশন, থ্রি-জি কন্টেন্ট ইত্যাদি হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যবহার করে অসাধুভাবে ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন।
পরে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শফিক তুহিন ওই বছরের ২ জুন রাত ২টা ২২ মিনিটে তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে অনুমোদন ছাড়া গান বিক্রির এ ঘটনা উল্লেখ করে একটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টের নিচে আসিফ আকবর নিজের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে অশালীন মন্তব্য করেন এবং হুমকি দেন।
মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, পরের দিন রাত ৯টা ৫৯ মিনিটে আসিফ আকবর তাঁর প্রায় ৩২ লাখ লাইক সমৃদ্ধ ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন। ৫৪ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড লাইভ ভিডিওর ২২ মিনিট থেকে তাঁর বিরুদ্ধে অবমাননাকর, অশালীন ও মিথ্যা-বানোয়াট বক্তব্য দেন।
ভিডিওতে আসিফ আকবর শফিক তুহিনকে শায়েস্তা করবেন—এ কথা বলার পাশাপাশি ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, তাঁকে যেখানেই পাবেন, সেখানেই প্রতিহত করবেন। এই নির্দেশনা পেয়ে আসিফ আকবরের ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে হত্যার হুমকি দেয়। মামলায় আরও বলা হয়, আসিফ আকবরের এ বক্তব্য লাখ লাখ মানুষ দেখেছে। তিনি উসকানি দিয়েছেন। এতে তাঁর (শফিক তুহিন) মানহানি হয়েছে।