সাংবাদিককে তুলে নিয়ে সাজার সব নথি চেয়েছেন হাইকোর্ট
কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে সাংবাদিককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় সব নথি (রেকর্ড) চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আগামী ২৩ মার্চের মধ্যে সব নথি রাষ্ট্রপক্ষকে আদালতে দাখিল করতে হবে। একই সময়ের মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নেওয়া পদক্ষেপও জানাতে হবে।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন ও ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশিস ভট্টাচার্য্য।
এর আগে গতকাল রোববার সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে দেওয়া সাজা ও দণ্ডের আদেশের অনুলিপি, অভিযান কারা পরিচালনা করেছে- মোবাইল কোর্ট নাকি টাস্কফোর্স, রাতে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে আইন অনুসারে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না, অভিযান পরিচালনার কারণ এবং আইন অনুসারে ঘটনা কার সম্মুখে কখন সংঘটিত হলো তা জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেন। এ আদেশ অনুসারে রাষ্ট্রপক্ষ নথির ফটোকপি দাখিল করে।
বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন।
আবেদনে টাস্কফোর্সের নামে আরিফুল ইসলামকে অবৈধ সাজা ও আটক করা কেন সংবিধান পরিপন্থী হবে না, আরিফুল ইসলামকে ৫০ লাখ টাকা কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। এ ছাড়া কুড়িগ্রামের ডিসি, সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তাদের ভূমিকার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তলব করা হয়েছে আরিফের বিরুদ্ধে করা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলার নথি এবং টাস্কফোর্স পরিচালনার।
এদিকে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে ২৫ হাজার টাকা মুচলেকায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুজাউদ্দৌলা গতকাল রোববার জামিন দেন। তারপরই তাঁকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। হাসপাতালে গণমাধ্যমের কাছে তিনি বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া এবং নির্যাতনের রোমহর্ষক বর্ণনা দেন।
আরিফুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার মধ্যরাতে জেলা প্রশাসনের লোকজন তাঁর বাড়িতে গিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। পরে তাঁকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে বাড়িতে ‘আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা’ পাওয়ার ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
তবে সাংবাদিক আরিফের সহকর্মী ও পরিবারের দাবি, একটি পুকুর সংস্কার নিয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন করায় জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ফাঁসিয়েছেন।