সাংবাদিক রোজিনার মুক্তির দাবি মির্জা ফখরুলের
প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে হেনস্থা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেই সঙ্গে মামলা প্রত্যাহার করে রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় নিজ বাসভবনে আজ মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই দাবি জানান মির্জা ফখরুল।
এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সচিবালয়ের মতো জায়গায় রোজিনা ইসলামের মতো অত্যন্ত হাইপ্রোফাইল সাংবাদিককে পাঁচ ঘণ্টা আটক করে, মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এরপর তাঁকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা এবং সেখান থেকে মিথ্যা মামলা দেওয়া— আমরা এর ধিক্কার জানাই।’
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমি তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ জানাচ্ছি, আমি নিন্দা জানাচ্ছি, এবং অবিলম্বে তাঁর (রোজিনা ইসলাম) বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার করে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য সচিবের পদত্যাগ দাবি করছি।’
এদিকে, অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টের মামলায় রোজিনা ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের রিমান্ডের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন আদালত। তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর জামিনের ব্যাপারে পরে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আজ মঙ্গলবার রোজিনাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। অপরদিকে রোজিনার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম রিমান্ড আবেদন নাকচ করে দিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে সরকারি নথিপত্র চুরির অভিযোগে গতকাল সোমবার রাতে শাহবাগ থানায় রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে যান রোজিনা ইসলাম। এ সময় তিনি মন্ত্রণালয়ের সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নেন এবং মোবাইল ফোনে ছবি তোলেন। পরে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাঁর শরীর তল্লাশি করে সেইসব নথিপত্র উদ্ধার করেন।
এই অভিযোগে রোজিনা ইসলামকে কয়েক ঘণ্টা সচিবালয়ে আটক রেখে সন্ধ্যার পর শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মী, তাঁর কর্মস্থলের সহকর্মী আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে রোজিনার মুক্তি দাবি করেন।
আটকের দীর্ঘ সময় পরে রোজিনার কয়েকজন স্বজন তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান। বেরিয়ে এসে রোজিনার বড় ভাই সেলিম জানান, তাঁর বোনকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে।