সিরাজগঞ্জে ২০০ বছরের দইমেলা
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের মুজিব সড়কে বসেছে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী দইমেলা। এ মেলায় শুধু দই নয়, পাওয়া যায় খই, চিড়া, মুড়ি, মুড়কি, বাতাসা, কদমাসহ নানা ধরনের খাবার। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে দিনব্যাপী এ দইমেলায় ভিড় করছে ক্রেতা-বিক্রেতারা। সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় ঘোষদের বসবাস। দীর্ঘদিন ধরে তারাই তৈরি করে আসছে নানা রকমের সুস্বাদু দই, মিষ্টি।
শ্রীপঞ্চমী তিথি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই তিথিতে শিক্ষার্থীরা ভক্তিসহকারে সরস্বতী দেবীকে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে থাকে। আর সরস্বতীর পূজায় ভোগ হিসেবে ফলমূলের পাশাপাশি দেয় মেলা থেকে কেনা সুমিষ্ট দই। বছরের এ সময়ে আত্মীয়স্বজন আসে তাদের কুটুম বাড়িতে। আর এ উপলক্ষে বিশেষ করে জামাইরা বেশি করে দই কিনে শ্বশুরবাড়ির জন্য।
আজ মঙ্গলবার ভোর থেকে শহরের মুজিব সড়ক এলাকায় বসেছে এই দইমেলা। জেলার বিভিন্ন স্থানে থেকে দই ব্যবসায়ীরা এসেছে এ মেলায়। এখানে খিরখাশা, খিরশা, খাশাসহ বিভিন্ন রকমের দই মেলায় উঠেছে। ১৮০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায় দুই কেজির দইপাত্র বিক্রি হচ্ছে। ভোর থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত হয়ে উঠেছে দইমেলা প্রাঙ্গণ। তবে এ বছর করোনার কারণে কিছুটা স্বল্পপরিসরে এ দইমেলা বসেছে।
চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুর কেজির মোড়ের রনি মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিক রনজিত কুমার ঘোষ বলেন, ‘দুধের দাম, জ্বালানি, শ্রমিক খরচ, দইপাত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় দইয়ের দামও বেড়েছে। তবে এ মেলা এক দিনব্যাপী হলেও চাহিদা থাকায় কোনো ঘোষের দই-ই অবিক্রিত থাকে না।’
দইমেলায় বগুড়ার শেরপুর থেকে আসা শুকুমার ঘোষ বলেন, ‘প্রতি বছরই তাড়াশের এই ঐতিহ্যবাহী মেলায় তিনি দই বিক্রি করতে আসেন। এ বছর দুধের দাম বেশি হওয়ায় দইয়ের দামটা একটু বেশি।’
মেলায় দই কিনতে আসা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সন্তোষ কুমার কানু বলেন, ‘সিরাজগঞ্জ ও তাড়াশে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী দইয়ের মেলা বসেছে। এই মেলায় প্রায় ১০০ মণ দই বিক্রি হয়ে থাকে।